এলোমেলো
-আসাদুজ্জামান জুয়েল
………………………..
ছেলেটা পাগল, ওকে তোমরা ঘেটো না
ছাড়ো ওকে,
ওর হৃদয়েও আছে কোন বেদনার গভীর ক্ষত।
ছেলেটাকে দেখছো যেমন, এমনটা ও ছিলো না
হয়ে গেছে এলোমেলো পৃথিবীর নির্মমতায়।
ছাড়ো ওকে,
ওরও ছিলো একটা সোনালী অতীত, সাজানো জীবন,
আজ ওর কাছে সবই সমান। রাস্তার ধারে কাটে দিন-রাত।
ভালোবাসার পাখিটার খোপায় যতনে ফুল গুজে দিতো,
কোলে আলতো করে মাথা রেখে দেখতো জেগে জেগে স্বপ্ন,
একটা ঘর হবে, সংসার হবে, হবে সুখের পরিবার।
পাখিটা ভালোবেসে ভরে দেবে সুখের নীড়
সারাদিন খুনসুটিতে কাটাবে সময়, ভরা পূর্ণিমায়
কাধে মাথা রেখে দাওয়ায় বসে দেখবে আলোর জোয়ার,
নাও ভাসিয়ে পাড়ি দেবে দিকহীন প্রেমের সাগর।
ছাড়ো ওকে,
ওকে ঘেটোনা, ওরও আছে বেদনার গভীর ক্ষত
রাস্তার পাশে ময়লা কুড়িয়ে খায় আজ,
ঘুমায় বিছানা-বালিশ বিহীন, এমনটা ছিলো না ও
ওরও আছে অতীত, ওরও ছিলো জীবন
পূর্ণিমার আলোর জোয়ারে যে প্রেমের নাও ভাসাতো
হারিয়ে যেতো নিরুদ্দেশ, এক অমাবষ্যায় ঢেকে দিয়েছে
ওর সকল আলো, ভেঙ্গেছে সকল স্বপ্ন,
সবটা করেছে এলোমেলো।
ছাড়ো ওকে,
ওকে ঘেটোনা, ওরও আছে বেদনার গভীর ক্ষত।
মোড়লের বখাটে পোলা যেদিন পাখিটার বুকে চেপে
খুবলে খেলো হৃৎপিন্ড, সেদিনই ওর পৃথিবীটা
এলোমেলো হয়ে গেছে।
এখন সে পাগল,
সবকিছু তার কাছে এলোমেলো
ওর কাছে দিন আর রাতের কোন তফাৎ নেই
নেই মৃত্যু বা জীবনে, আহারে বা অনাহারে
নিদ্রা বা জাগ্রতে, আকাশে বা পাতালে।
পৃথিবীটা ওর কাছে এখন না মধুময় না বিষাদের।
শরীয়তপুর, ১৫ জুলাই ২০২০।