হৃদয়ের শব্দক্ষরণ

আসাদুজ্জামান জুয়েল

বৈশাখী প্রকাশ

হৃদয়ের শব্দক্ষরণ
লেখক আসাদুজ্জামান জুয়েল
প্রকাশক বৈশাখী প্রকাশ
৩৮, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০
মোবাইল : ০১৭১২৮১৮৩০৩, ০১৭৩৪৯০১১৩৯
প্রকাশকাল একুশে বইমেলা ২০১৯
গ্রন্থস্বত্ব লেখক
প্রচ্ছদ মোঃ ফরিদ হোসেন
বর্ণবিন্যাস স্বদেশ কম্পিউটার সিস্টেম
মুদ্রণ রাবেয়া প্রিন্টার্স
মূল্য ২৫০ টাকা মাত্র

উ। ৎ। স। র্গ

আমার প্রয়াত মা রওশনারা বেগম

পিতা আবদুর রশিদ খান
যাদের জন্য আজ আমার পৃথিবী দেখা।

কিছু কথা
আমিতো কবি নই। মনে যা আসে তাই লিখি। কখনো লেখায় ঢুকে যায় গালাগাল, কখনো প্রেমের কথা, কখনো দ্রোহের কথা, কখনো প্রকৃতির কথা। তবে মনের কথাগুলো লিখে রাখি কবিতার মত করে।
আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন কবি গেরিলা আজাদ যাকে অনেকে হিরন্ময় আজাদ নামেও চেনে। আসলে তার নাম আবুল কালাম আজাদ, পেশায় আইনজীবী। আমার সেই প্রিয় কবি গেরিলা আজাদ আমার কবিতা পড়ে মন্তব্য করে ‘জুয়েল তুই সময়ের কবি।’ শুনে আমি পূলকিত হই।
আমি কবিতা লিখি মনের টানে। আমি লিখি না, মন আমাকে দিয়ে তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে নেয়। লেখালিখি আমার হৃদয়ের খোরাক। সেই লেখা যদি কারো ভালো লেগে যায় সেটা আমার বাড়তি পাওনা।
আমি কৃতার্থ আমার পাঠক বন্ধুদের কাছে যারা আমার লেখা গ্রহণ করেছে এবং আমায় একের পর এক লিখতে উৎসাহ দিয়ে সহযোগীতা করেছে আর সেটা যাচাই করা সম্ভব হয়েছে ফেসবুক, ব্লগের কল্যানে।
আমি কৃতার্থ সেই পাঠকদের প্রতিও যারা লেখা পড়ে কটাক্ষ করে, সমালোচনা করে, উপহাস করে। কারন তাদের সমালোচনা, উপহাসের কারনে আমি সব সময় সতর্ক হই। আমি কৃতার্থ আমার আইনজীবী বন্ধু, শুভাকাঙ্খিদের প্রতি। আমি কৃতার্থ আমার পরিবারের সকলের প্রতি যেমন, বাবা, ভাই, বোন, ভাবি ও সহধর্মীনির কাছে যারা প্রতিনিয়ত আমাকে লিখতে উৎসাহ যোগায়।
আমি আগেই বলেছি, আমি কোন কবি বা লেখক নই। তাই আমার লেখার শব্দ গঠনে, বানানে অনেক ভুল থাকে। আমি আমার অযোগ্যতাকে লুকাতে চাই না। অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলো আমার অজ্ঞতা, অযোগ্যতা, জ্ঞাণের সীমাবন্ধতা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমার ভুল গুলো পাঠক বন্ধুরা তাদের বিশাল হৃদয় দিয়ে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে লেখাটা গ্রহণ করবেন বলেই আশা করি।
আমার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘যেমন আছি লন্ডনে’, ভ্রমন নিয়ে লেখা দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘পথের পদ্য-১ ॥ কলকাতা ভ্রমণঃ জীবণে প্রথম কিছু’, একান্ত নিজস্ব মতামতের উপর লেখা তৃতীয় গ্রন্থ ‘পথের ভাবনা’ পাঠক বন্ধুরা সাদরে গ্রহণ করে আমায় কৃতার্থ করেছেন। এটা আমার প্রথম কবিতার বই। তাই কবিতার বইটি পাঠক গ্রহণ করলে আমি চির কৃতার্থ হব। সবাই ভালো থাকবেন।

আসাদুজ্জামান জুয়েল
আইনজীবী
শরীয়তপুর।

-ঃসূচী পত্রঃ-

মা………………………….. ৯
ইচ্ছে করে……………………. ১০
উপলব্ধি……………………… ১১
নাম তার জঙ্গি সাইফুল!!………. ১২
সময়………………………… ১৪
সাধ…………………………. ১৫
গভীর রাত…………………… ১৬
উড়াল পঙ্খি… ………………..১৭
চোরের হাট………………….. ১৮
সাবধান ……………………..১৯
দেব শিশুর জলবিছানা………… ২০
নাম তার সুচি …………………২২
শান্তির চাষ!……………………২৩
প্রেমের কাব্য………………….. ২৪
থামাও এবার…………………. ২৬
পরা মানবিক…………………. ২৭
ভাঙ্গা-গড়া…………………… ২৮
বিবাগী………………………. ২৯
সারমেয়………………………. ৩০
ইচ্ছে…………………………. ৩১
ভবের বাজার………………… ৩২
মা ইলিশের আকূতি…………… ৩৩
চিন্তায় আছি!………………… ৩৪
উপহাস……………………… ৩৫
যদি পারো …………………..৩৬
যাও যে ছেরে!……………… ৩৭
একটি হাত………………… ৩৮
দুঃখ বিলাস…………………. ৪০
হৃদয় পোড়ার গল্প…………… ৪১
লেবাস……………………… ৪৩
বিজয় ……………………….৪৪
১৪ ডিসেম্বর স্মরণে ……………৪৫
অধিকার …………………….৪৬
প্রশ্ন …………………………৪৭
পাখিরে…. ………………….৪৮
সেরা সম্পদ… ………………৪৯
রাস্তা ………………………..৫০
শীত …………………………৫১
রাজা ………………………..৫৩
উপলব্ধি ………………………৫৪
বসন্ত …………………………৫৫
পীর বাবা ……………………৫৬
চাকরিরে!…………………….৫৭
কষ্ট………………………….৫৮
হে বীর ………………………৫৯
সাবধান !…………………… ৬১
ফ্রেশ ক্লাব ……………………৬২
দশা …………………………৬৩
সুরা ………………………….৬৪
একদিনের বাঙ্গালী ……………..৬৫
ডাষ্টবিন থেকে বলছি মাগো………৬৬
গালি ………………………….৬৭
আর কত? …………………….৬৮
স্বভাব …………………………৬৯
টান …………………………..৭০
বাণী!!! ………………………..৭১
মানুষ হও ……………………..৭২
ইলিশের আকুতি ………………..৭৩
ভবনদী ………………………..৭৪
ভাঙ্গন নিয়ে ভাঙ্গা পদ্য …………..৭৫
খন্ড খন্ড কথা ………………….৭৬
কবির গায়ে জ্বর …………………৭৮
বৃষ্টি ……………………………৭৯
বৃথা চেষ্টা ………………………৮০

মা…

মায়ের ভাষা শুনেও আমি
বুঝিনি মায়ের কথা
মা হারিয়ে বুঝি এখন
মা হারানোর ব্যাথা।
মায়ের অভাব হয়নি পূরন
পেয়েছি আমি যতই
মায়ের অভাব হয় না পূরন
পেলাম ভবে কতই!
মা থাকতে মা’যে আমার
চাইলো নাতো কিছু
দিতে না পারার কষ্ট যে আজ
ছারছে না মোর পিছু।
শত কষ্ট, অভাব-অনটন
বুঝতে দেয়নি মা!
না শোনা কথার জন্য
মাফ চাইতাম ধরে দু’পা!
ইচ্ছা হলেও আজকে আমার
চাওয়ার জায়গা নাই
শত ব্যস্ততা কাজের মাঝেও
মায়ের পরশ পাই
আমার মায়ের হাসি মাখা মুখ
পৃথিবীর চেয়েও সেরা
বুঝতে যখন পারি তখন
আমি যে মা হারা।
মাগো তোমায় ভুলবো আমি
সেই সাধ্য কি আছে
চেষ্টা করি মাকে যেন
ভুলে না যাই পাছে…..

ইচ্ছে করে

ইচ্ছে করে চাপাতি হাতে বেরিয়ে পরি
ইচ্ছেমত কুপিয়ে কুপিয়ে কিমা বানাই
ভয় পেয়ো না, হও যদি আম জনতা
তোমার জন্য আমার যে নেই প্রয়োজন
তোমার জন্য দাড়িয়ে আছে সোনার ছেলে
যা করার করবে সে যে, আছে ক্ষমতা।

ইচ্ছে করে অস্ত্র হাতে বেরিয়ে পরি
দেশটাকে আরেকবার স্বাধীন করি
মানবতাহীন সমাজটাকে ধ্বংস করে
মানবতার সোনার দেশটা আবার গড়ি।

যখনই মন বলে, কোপা সামসু
কেউ যেন বলে, থাম, জিরা, পানি খা
ইচ্ছে করে বাঁধন ছিরি, গুড়িয়ে ফেলি অসঙ্গতি, জঞ্জাল
মন বলে লাভ কি? পিছন ফিরে দেখ সবাই প্রস্তুত
মহুর্তেই তোর ভিডিও ভাইরাল, নিন্দার ঝর বইবে
সামাজিক মাধ্যমে, সাথে দমকা হাওয়া, ভাঙ্গবি তুইই,
অতঃপর রনেভঙ্গ, এটা তোর কাজ না
তুই থাক তোর ভূবনে, ঐ দেখ আসছে
এবার তুই কিমা হ!

উপলব্ধি
(বাবা মা হারা সকলকে উৎসর্গ করে)

যার যায় সে-ই বুঝে, বাবা কি মা
তাদের সমান ভবে, কিছু হয় না।
সব কিছু পাওয়া যায়, টাকা আর চেষ্টায়
পিতা-মাতা’র দান যায়না পাওয়া
বুঝা যায় একেবারে শেষটায়।

শাসনের আড়ালে ঢাকা পরে ভালোবাসা
ব্যস্ততার অযুহাতে হয় না যে কাছে আসা।
কেন আসে, কেন যায় বিধাতাই জানে
মমতার বাঁধনে বেঁধে, কেন কাছে টানে!
আজ তুমি সন্তান, কাল তুমি বাবা-মা
কাল তুমি চলে যাবে, সে কথা কি ভাবো না?
আজ তুমি হাসো খেলো, কাল তুমি কাঁদবে
মমতার মায়াজালে ক’জনাকে বাঁধলে?
এ জীবণ চিরদিন এভাবে তো যাবে না
ভালোবাসো এখনই, সময় যে পাবে না।
২৫/১১/২০১৬

নাম তার জঙ্গি সাইফুল!!
(হলি আর্টিজানে মৃত পাচক সাইফুলকে উৎসর্গ করে)

বিদেশ ছিলে যখন, তখন ছিলে যে প্রবাসী
দেশে এলে, আর গেলে না, সে খবর আজ বাসি!
বিদেশ ছিলে, বউ বাচ্চা তখনও ছিল দেশে
জীবিকার টানে, চলে গেলে ঢাকা, সেই প্রবাসীর বেশে!

প্রবাসে তুমি রাধতে ভাল ওয়েষ্টার্ণ ফুড, পিৎজা
দেশে এসে সেকাজ ধরলে, পাওনি সরম লজ্জা!
ছোট্ট ছেলে, মা’মনিটা, প্রাণের প্রিয়া বধু
চেয়ে কাটে দিবস ও মাস পথের দিকে শুধু!
ভাবনা ছিল, আসবে বাড়ি, সামনে ঈদের ছুটি
প্রাণের অংশ, সন্তান নিয়ে করবে লুটোপুটি!
ছেলে মেয়ে দৌড়ে এসে ধরবে তোমার গলা
কানে কানে বলবে ও’কে, যে কথা হয়নি বলা!

হলি আর্টিজান, হোটেলের নাম, সবাই নামটা চিনে
সাইফুল সেথা পিৎজা বানায়, সময় কাটে কিচেনে
ছোট্ট কিচেন, গরম অনেক, মাথার ঘাম পরে পায়
মাসটা গেলে শ্রমের বাবদ অল্প বেতন পায়
নিজে চলে, যতটা বাঁচায় পাঠিয়ে দেয় যে দেশে
ঐ টাকাতে প্রাণের প্রিয়া সংসার চালায় হেসে।

হোটেলটিতে অতিথি আসে দেশি ও বিদেশী
ভাল, মন্দের সাথে আসে বখাটেরাই বেশি
হঠাৎ এক অজানা ঝড়, নিল সেদিন পিছু
কোথা থেকে, কিযে হলো, বুঝলো না সে কিছু
ভদ্র বেশে ব্যাগ কাধে, ঢুকলো কয়েক যুবক
ইসলামেরই ভুল ব্যাখ্যা, শোনালো কিছু ছবক

একে বাইশ ও পিস্তল বের করলো তারা নাইটে
আমাক নিউজ তাদের ছবি, করলো প্রকাশ সাইটে
কালো ব্যানার বিছনে রেখে তুলছে তারা ছবি
কালো পোশাকে দেখতে যেন ধ্বংস ক্রিয়ার কবি
ঢুকেই তারা বৃষ্টির মত গুলি করে হোটেলে
তাজা প্রাণ পড়লো ঢলে, মৃত্যুর মিছিলে!

পাচক সাইফুল, রাধে বাড়ে, নাইতো সাতে পাঁচে
জঙ্গি কি ভাই? তাদের কি কাজ! সে খবর কি আছে?
বাচার জন্য কি আকুতি, বাথরুমে, কিচেনে
সে তো ধনির দুলাল নয়রে, কে বা তাকে চেনে?
বীর সেনানীর দীর্ঘ লড়াই, যুদ্ধ হলো সারা
জঙ্গির সাথে মরতে হলো, পাচক ছিল যারা।
সব শেষেতে সবুজ ঘাসে, লাশ করলো জড়ো
দেশে বসে, প্রিয়ার মনযে করছে থর থর
পাচক বেশে সবুজ ঘাষে, সাইফুলও যে এলো
নামটা পাচক সাইফুল নয়, জঙ্গি দেয়া হলো!
সাইট ইন্টেলিজেন্ট আমাকে নাই যে, সাইফুলেরই নাম
ঘোষনার পরে, অস্বীকার কি ভদ্রলোকের কাম?
বলছি বেটা জঙ্গি যে তুই, বদলাবো না কথা
বুঝলনা কেউ, ছেলে-মেয়ে পরিবারের ব্যাথা!
পেটের দায়ে এসেছিলো, করতে এথায় কাজ
সাইফুল হলো কেষ্টা বেটা, তোমরা সাধু আজ!

সময়

সময় যখন প্রতিপক্ষ
ছুতে পারি না কোন লক্ষ্য।
পকেট ফসকে যায় টাকা
মাথা ফসকে ব্রেন ফাকা।

হৃদয় ঘাটি মন ফাকা
ক্যানভাস সাদা রঙ্গে আকা।
শুন্য পকেট শুন্য মাথা
শুন্য হৃদয় শুন্য খাতা।

হাত বাড়ালে হাতটি ফাকা
অপেক্ষাতে বসে থাকা
তাকিয়ে দেখি সামনে ফাকা
রাস্তা দেখি আকা বাকা।

আকাশ দেখি তারা নাই
দিনের বেলা সূর্য নাই
মেঘ ভাসে বৃষ্টি নাই
বিদ্যুৎ চমকে বজ্র নাই।

সময় হাতে কাজ নাই
ইচ্ছে করে, সাজ নাই
রুপ আছে লাবন্য নাই
চার দিকে যে নাই নাই।

শুন্য পকেট শুন্য মাথা
শুন্য হৃদয় শুন্য খাতা।
পূর্ণ হোক পূর্ব হোক
আনন্দে কাটুক শোক…

সাধ…..

অনেক কথা বলতে চায় যে মন
বললে কথা থাকবে না কেউ আপনজন
অনেক কিছু দেখতে চায় যে মন
দেখাবে যারা তারাই দরিদ্রজন
অনেক করে বাসতে চাইযে ভালো
বাধায় বাধায় সেটা কি আর হলো?

মন চায় অনেক কিছু করতে
সাফল্যেরই সোনার হরিণ ধরতে
মন চায় অনেক কিছু পেতে
কোর্মা, পোলাও, জর্দ্দা, ফিন্নি খেতে
মন চায় উজার করে দিতে
কিছুটা তোমার থেকে নিতে।

মনের উপর জোরতো চলে না
মনের কথা খুলেও বলে না
দিতে চেয়ে হাত খুলে দিলে না
নিতে গিয়ে পুরোটা নিলে না
বাসলে ভালো আধা আধা করে
ভেঙ্গে গেলো ভালোবাসা পরে।

অনেক দেখা অনেক পেতে চাওয়া
অনেক দেয়া অনেক নিতে যাওয়া
কোন পাওয়াই হয় না পুরোপুরি
সবই কি তবে কথারই ফুলঝুড়ি?
দেখতে-শুনতে চাওয়া কি অপরাধ?
সুখি-সুন্দর দেশ এটাই আমার সাধ!!!

গভীর রাত…

সবাই যখন ঘুমে
আমি একা রুমে
সবাই ঘুমে বুদ
আমি রাত জাগা ভুত।

সবার ভাবনা এক
আমার ভাবনা আরেক
সবাই দেখে ভুল
আমি দেখি ফুল।

সবাই দেখে রাত কালো
আমি দেখি ততে আলো
রাতটা ঘুমের জন্য
আমার ভাবনা অন্য।

অনেকেরই রাত জেগে কাটে
জোর করে চোখে ঘুম কি আটে?
রাত জাগা প্রাণী খাবার খোজে
সেই কথাটা সবাই বোঝে।

আমার ভাবনায় অন্য কিছু
সবাইক কি ঘোরে খাবারের পিছু?
সবাই কি আর আমার মত?
রাত নিয়ে চলে ভাবনা শত!

আমার কেন ঘুম আসে না
সেই কথা আমি জানি না
চোখ থেকে ঘুম কোথায় গেল?
জীবন কেন এলোমেলো?

উড়াল পঙ্খি…

বন্ধুরে চাই বোঝাতে …
বন্ধু কেন বোঝে না?
সুখ খুজে বেরাই…
সুখ আমায় খোজে না…

আমি বাসি ভালো
সে কেন বাসে না
আমি আসি কাছে
সে কেন আসে না?

আমি চাই তারে
আসুক বারে বারে
হৃদয়ে করুক বিচরণ
সে হোক আমারই মরন!

আমার হৃদয় দিয়ে
চাইনিতো খুব বেশি
ভালোবাসার জোরে
পেতে চাই আপন করে!

অধম জুয়েল বলে,
তুই যদি হস আমার
উজার করে সব দিব
গড়বো প্রেমের বাগান।

চোরের হাট

চিত্ত চোর আর বিত্ত চোর
দুই’য়ে ফারাক রাত্রি-ভোর।

চিত্ত চোরের অভাব বড়
বিত্ত চোর জেলে ভর।

চিত্ত আছে চোর নাই
চোর আছে বিত্ত নাই।

আধার ঢাকলে দিনের আলো
দেখতে কি আর লাগে ভালো?

দিনের আছে রাতের নাই
দিনের সাথে রাত মিলাই

দিনের আলো দিনেই ভালো
রাতের আলো আধার কালো।

দুইয়ের মজা দুই ধরনের
দুইয়ের শোভা দুই ধরনের।

বিত্ত চোরের আনাগোনা
রাতে আছে, দিনেও
চিত্ত চোরের আনাগোনা
সারাটা দিন ক্ষণেও।

সাবধান

আমার মনে নিত্য দুঃখ
নিত্য ঘরে অনটন
ভাবছি এবার উঠবো জ্বলে
করবো এবার অনশন।

আমার সাথে প্রতারণা
করেছ সবাই সব সময়
আমি সবই বুঝেত পারি
বোকা ভাবা উচিত নয়।

জবাব যখন দেব আমি
উঠবো যখন জ্বলে
ধ্বংস হয়ে যাবে তুমি
ধরনী উঠবে টলে।

দেব শিশুর জলবিছানা

জলবিছানায় ঘুমিয়ে আছে
দেখতে যে দেব শিশু
শান্ত সে যে চোখটি বোজা
বোঝে না সে কিছু।
বোঝে না সে সীমান্ত কি
কাটা তারের বেড়া
বোঝে না সে এ দেশ ওদেশ
মানুষ-হায়নার তাড়া।

হায়নারা আসলো গায়ে
করলো শুরু গুলি
জ্বালিয়ে দিলো শেষ সম্বল
জ্বলছে যে ঘরগুলি।
মা-বোনেদের করছে তারা
ধর্ষন ও হত্যা
আর্তনাদের শব্দটা কি
শোনেনা বিশ্ব কর্তা?

প্রাণ বাঁচাতে সব যে ফেলে
হলো ঘরের বার
ভয়ের চোটে দেব শিশুটি
হাতটি ধরলো মার।
ছুটছিলো সে হাতটি ধরে
মায়ে সাথে সাথে
ছুটছিলো সে দিক বিদিক
অজানারই পথে।

দেব শিশুটি বোঝে নাতো
মানুষ মানবতা
দেব শিশুটি বোঝে নাতো
হিংসার ব্যাকুলতা।
দেব শিশুটি বোঝে নাতো
বৌদ্ধ-মুসলমান
দেব শিশুটি বোঝে নাতো
নিচ্ছে কেন প্রাণ।

হিংসার আগুনে পোড়ে
গ্রাম, দেশ, মানবতা
হিংসার আগুনে পোড়ে
ফেলে আসা স্মৃতি কথা।
হিংসার আগুনে পোড়ে
ধর্ম আর সমাজ
হিংসার আগুনে পোড়ে
মানুষ-রহিংগা সমাজ।

গ্রাম পুড়েছে ঘর পুড়েছে
কারন যে নাই জানা
চির নিদ্রায় গেছে সে যে
পেতে জলবিছানা।
হিংসাটাও থেমে যাবে
থামবে যে সবকিছু
সেদিন তো আর নিদ্রা থেকে
উঠবে না দেব শিশু।

এই শিশুটির দেশটি কোথায়
গ্রামের নামটি কি?
কে করে তার শাসন জানো?
অং সান সুচি!
শান্তিতে পায় নোবেল সে যে
গ্রাম উজার করে
সেই দেশেতে নিরিহ মানুষ
হায়নায় খায় মেরে।
নাম তার সুচি

নাম তার সুচি, সবাই করে ছিঃ ছিঃ
নাই মানবতার রুচি, ছিঃছিঃ ছিঃছিঃ ছিঃছিঃ।
কাজ তার মন্দ, নাই তাল ছন্দ
মানবতার সাথে তার, চলছে যে দ্বন্দ।
শান্তিতে নোবেল, কিনছে চড়া দামে
উসুল করছে তা, রক্ত ও ঘামে
পুড়ছেযে ঘর, নিচ্ছেযে প্রাণ
মানুষ পুড়িয়ে নেয়, মাংসেরই ঘ্রাণ।
তাইতো বলি তাকে, জানোয়ার সুচি
সবাই তাইতো বলে, ছিঃছিঃ ছিঃছিঃ ছিঃছিঃ।

শান্তির চাষ!

গোস্ত পোড়া গন্ধ ঘোরে বাতাশে
আশে পাশে চরুইভাতি, বারবিকিউ নয়
ঘর পুড়ে, শষ্য পুড়ে, ল্যাপ খাতা কম্বল
পাশের চটলায় উল্লাশ, মাতামাতি, পালাক্রমে ধর্ষন
স্বজনের আর্ত চিৎকার, জবাই করা লাশের গোঙ্গানী
প্রাণ নিয়ে দিকবিদিক ছোটাছুটি
ঘরতো নেই, পোড়া ভিটামাটি ছেড়ে
পয়ত্রিশ কিলো পায়ে হেটে এসেছে ওরা
সমুদ্র স্নানে, খোলা আকাশে রাত্রিযাপনে!
মানুষ মারা যেখানে উৎসব
শান্তির মেডেল পড়া গলায়
আমাকে দিয়ে কি হয় মানবতার ক্ষতি!
আমি রাখাইনে করি শান্তির চাষ!
ঘর বাড়ি পোড়া শেষে তপ্ত ভিটার
কয়লাগুলো সরিয়ে, সরিয়ে জঞ্জাল
মানবতার চাষের জন্য জমি করি উর্বর
পোড়া ভিটার অবশিষ্টাংশ গুড়িয়ে দিয়ে
ভূমি করি সমতল, উচু নিচু ভূমিতে
মানবতার চাষে সমতার হয় অভাব
আমি যে শান্তিতে মেডেল পাওয়া কৃষক
আমাকে দিয়ে কি হয় মানবতার ক্ষতি!
আমি রাখাইনে করি শান্তির চাষ!

প্রেমের কাব্য

তোমার তখন চৌদ্দ চলে, আমার বয়স ষোল
প্রথম দেখায় আমার মনে, কি যেন কি হলো।
আলতো হেসে গা’টি ঘেষে, পাশ দিয়ে যে গেলে
চোখটি দেখে কি যে হলো, প্রেমে দিলে ফেলে।

তুমি তখন নাইনে পড়, আমি একাদশে
মনটা চাইতো বলি কথা, পাশাপাশি বসে।
তোমার বাড়ি আমার বাড়ি, নয়তো বেশি দূরে
তোমাকে গান শুনাই আমি, অমর প্রেমের সুরে।

আসতে যেতে হয়যে দেখা, অল্প স্বল্প কথা
দুষ্টমিরই ছলে হচ্ছে, প্রেমের মালা গাথা।
ছোট ছোট চিঠির সাথে, প্রেম দেয়া নেয়া
অজান্তেই ভাসিয়ে দিলাম, মোদের প্রেমের খেয়া।

স্কুল ফাকি দিয়ে তুমি, আমার ক্লাস রেখে
নির্জনেতে কথা বলি, পাছে কেউ না দেখে।
লোক লজ্জার ভয়ে কাপে, বুকটা দুরু দুরু
অনেক আগেই হয়েছে মোদের, প্রেমের কাব্য শুরু!

আস্তে আস্তে প্রেমের কাব্য, সবাই গেল জেনে
প্রিয়ার বাবা ক্ষেপলো ভীষন, নিলো নাযে মেনে।
বাল্য কালেই প্রিয়াকে মোর, দিয়ে দিলো বিয়ে
খবিস বাবা আমার থেকে, প্রিয়াকে গেল নিয়ে।

আমার বাবাও কম যায়না, পাঠালো আমায় বিদেশে
মনটা আমার পড়ে রইলো, প্রিয়ার কাছে স্বদেশে।
দীর্ঘ সময় প্রবাসে থেকে, এলাম আবার দেশে
প্রিয়ার সাথে হঠাৎ দেখা, হলো অবশেষে।

জানতে চাইলো মনটা আমার, কেমন আছে প্রিয়া
সেই কবে যে হয়ে গেছে, আমার প্রিয়ার বিয়া।
এখন তুমি অন্যের ঘরে, অন্য হৃদয় জুড়ে
মনটা আমার তোমার জন্য, এখনও যে পোড়ে।

দেশে কিংবা বিদেশ থাকি, মনটা তোমারই কাছে
তোমায় ভুলবো এই জীবনে, সে সাধ্য কি আছে?
দূর থেকে দেখে মনে মনে, বলছি একটা কথা
ভাল থেকো তুমি যতই থাকুক, আমার মনে ব্যাথা।

থামাও এবার

হিংসার আগুন যখন ছড়িয়ে পরে
গ্রাম থেকে গ্রামে, ঘর থেকে ঘরে
ধর্ম তখন নিরবে কেঁদে কেঁদে
শোনায় তার অমূল্য বাণী
‘সব্বে সত্তা সুখিতা ভবন্তু’
‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’
হে মানবতার মেডেলধারী সুচি
তোমার জগত মায়ানমারের
রোহিঙ্গা প্রাণীরা কি সুখে আছে?
খুব জানতে ইচ্ছে করে সুচি,
তুমি কি সেই আগের মতই আছো
নাকি অনেক খানি বদলে গেছো?
হিংসার আগুন যখন গ্রামে লাগে
পীরসাহেবের ঘরও নাকি বাদ যায়না
আরাকান পুড়ছে আর তুমি বিষের বাঁশী বাজলে?
আগুন থেকে বাঁচলেও তাপ তোমায় ঝলসাবে ঠিকই
প্রচন্ড তাপে তোমার মেডেল গলে গলিত লাভার মত
বুক বিদীর্ণ করে ফোটায় ফোটায় পরবে রোহিঙ্গাদের রক্তের মত
আর কত রক্ত ঝড়লে মনে হবে এখন মানবতার গায়ে রক্ত লেগেছে
আর কত মানুষ পুড়লে তোমার নাকে যাবে পোড়া মাংসের গন্ধ
আর কত ধর্ষিত হলে মনে হবে ইজ্জত আজ ভূলন্ঠিত
আর কত মানুষ মরলে মনে হবে এটা গণহত্যা
আর কত বাড়ি পুড়লে মনে হবে জমিন এবার শক্ত হয়েছে?
এবার থামাও এবার থামাও এবার থামাও এ হত্যাযজ্ঞ।

পরা মানবিক

আমি কিছু বোমা বিক্রি করবো
অত্যন্ত সুলভ মূল্যে, আগে আসলে আগে, ভিত্তিতে
বোমাগুলো পারমানবিক জাতের
অত্যন্ত হাইব্রিড, উচ্চ ফলনশীল, অনেকটা উফসী জাতের!
আমার বোমাগুলো কাজ দেয় ভাল, তরতাজা, টাটকা
একটা ব্যবহারে আপনি ফল পাবেন হাজার বোমার মত
আপনার চিন্তায়ও নেই কেমন এর কার্যক্ষমতা!
মনে হয়তো প্রশ্ন জেগেছে, পারমানবিক কেন?
করান এর কার্যক্রম মানবিকতাকে করে পরাভূত
সে এক বিরাট ইতিহাস,
নাম রেখেছিলাম পরা মানবিক, শুনতে কেমন যেন লাগে!
পরে এভিডেভিট করে, রাজস্ব দিয়ে নাম সংশোধন
সেকি ঝক্কি ঝামেলা, এখন সে পারমানবিক বোমা।
আমার বোমাগুলো মানবিকতাকে ধ্বংস করে এমনভাবে
যেখানে আর কোন মানব থাকবে না, যাদের কৈ মাছের প্রাণ তারা থাকবে
তবে শত বছর পরেও বাচ্চা দিবে বিকলাঙ্গ
সেই শিশু বড় হয়ে মাথা তুলে দাড়াবে না।
ককটেল, হাত বোমা, টাইম বোমা? অনেক আগেই বেচা ছেড়েছি এগুলো
একসময় চাহিদা ছিল, অস্বীকার করবো না
নির্বাচনে, মিছিলে, পিকেটিংয়ে, হরতালে
এগুলো ছাড়াতো সফলতার কথা ভাবাই যায়নি।
ওগুলো কেবলই ইতিহাস! গ্রেনেড বেচাই ছেড়েছি সেই কবে!
আমার আছে, আপনার থাকবে না, এমন অসম মানব সমাজ আমি চাই না
সুলভ মূল্যে নিয়ে যান, তবে স্টক সীমিত
নিলে আমায় কথা দিতে হবে, প্রয়োগে যেন মানবিকতাই মড়ে, অমানুষ নয়
ধ্বংসযজ্ঞ দেখে যেন সবাই আৎকে ওঠে
চারিদিকে যেন ধ্বণিত হয় আর্তনাত
চাইলে তুমি আমাকে মেরেই শুরু করতে পার মানবিকতার দাফন!

ভাঙ্গা-গড়া

পদ্মা পারে বাড়ি ছিল, স্কুল, খেলার মাঠ
এইখানেতেই নিয়েছিলাম আমার প্রথম পাঠ।
এইখানেরই মাটি মেখে, দৌড়ে আছার খেয়ে
এই নদীতে চৌ ডুব খেলে উঠেছি আমরা নেয়ে।
উত্তর ভিটি ঘর ছিলো মোর আসতো দখিনা হাওয়া
পূর্ব ভিটায় রান্না ঘরে পদ্মার ইলিশ খাওয়া।
ঐ দূরেতে পদ্মার ছিল শান্ত নদীর জল
আজকে পদ্মা দেখে করছে চোখটি ছলো ছল।
প্রমত্তা এই পদ্মা যে আজ ভাঙ্গছে প্রবল বেগে
হচ্ছে মনে প্রকৃতি আজ আছে ভীষন রেগে।
আমার বাড়ি প্রিয়ার বাড়ি সবই নিছে কেড়ে
অনেক দূরে গেলাম চলে বাপের ভিটা ছেড়ে।
এপার ভাঙ্গে ওপাড় গড়ে হৃদয়েরই মত
বাড়ি-প্রিয়া সব পাওয়া যায় থাকে গভীর ক্ষত।
ভাঙ্গা গড়ার খেলা চলে প্রকৃতির নিয়মে
ওপার ভাঙ্গা শুরু হলে এপার যাবে থেমে।
ভাঙ্গা গড়া থামবে কখন কেউতো জানি না
পদ্মা পাড়েই হলো আমার নাড়ীর ঠিকানা।

বিবাগী

তোরে ভালবাসি বলে এখন যে জগতে
নিজের ইচ্ছায় এসেছিলাম পূর্ব জগৎ হতে।
সেই জগতে সব যে ছিল ভাই বন্ধু স্বজন
সবার ছিলাম নয়নমনি কেউ ভাবেনি কুজন।
তোর সাথে হলো দেখা মনটা নিলি কেড়ে
স্বার্থ ছেড়ে হলাম যে তোর সেই জগতটা ছেড়ে।
আস্তে আস্তে বুনলাম আমরা ছোট্ট প্রেমের জাল
তোর সাথে মোর প্রেমটা হলো এই জীবনের কাল।
কথা দিলি থাকবি সাথে সারা জীবন ভর
কথা দিলাম আমিও থাকবো প্রেমে দিয়ে ভর।
সামাল দেবো ঝড়-ঝঞ্জা তোকে সাথে নিয়ে
মোকাবেলা করবো দুজন প্রেমের দেয়াল দিয়ে।
ভালবাসার ঘর বাঁধিব অচিন দেশে গিয়ে
রাণীর মত রাখবো তোকে নিজ ভূবনে নিয়ে।
ঘর ছাড়িলাম, সমাজ, স্বজন তোকে ভালবেসে
একবারও যে ভাবতে চাইনি হবে কি অবশেষে।
হৃদয় মাঝে শুরু যখন করলি বসবাস
তোকে ভেবেই কাটে আমার সকাল দুপুর সাঝ।
হৃদয় মাঝে তুইযে ছিলি ক্যান্সারেরই মত
ভাবিনি কভু ছেড়ে যাবি হবে এতটা ক্ষত।
আমার হৃদয় ঘেটে যে তুই গেলি অন্যের কাছে
তার কাছে কি আমার চেয়েও বড় হৃদয় আছে?
তার চেয়ে আমার হৃদয় বড় সম্পদ ছিলো না
আমার চেয়ে বেশি বাসবে ভালো, হতেই পারে না।
ছেড়ে গেলি দোষটা যে কি ভাবনাতে না আসে
বিবাগী আজ সবাই এখন আমায় দেখে হাসে।
সমাজ সংসার সব যে গেলো তোকে ভালবেসে
সব ভুলে তুই চলে গেলি হৃদয় ভেঙ্গে হেসে।
আমি এখন পথে পথে ঘুরে বেড়াই একা
আশায় আশায় দিনযে কাটাই যদি হয়রে দেখা।
সারমেয়

নেতার জন্য সব পারি
রাখতে বাজী জীবন
নেতার তরে সপে দিলাম
আমার দেহ মন!

তার কথাতে মিছিল করি
পিকেটিং, অবরোধ, হরতাল
তার কথাতে করতে পারি
রক্তে দিয়ে রাস্তা লাল।

তার কথাতে টেকনাফ থেকে
ইয়াবা আনি ঢাকায়।
তার সাথে যে গাড়িতে চলি
কেনা অবৈধ টাকায়!

চাটুকারি করি আমি
সাথে থেকে সারা বেলা
অন্যের সাথে যুদ্ধ করি
খেলতে পা’চাটা খেলা।

পদটা নিতে, থাকতে টিকে
পুতুলের মত নাচি
তার কথাতেই জীবন মরন
তার আশাতেই বাঁচি!

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
এসব কিছু ছেড়ে
মুক্ত বাতাশ মাখি গায়ে
উঠি
স্বাধীন ভাবে বেড়ে।
ইচ্ছে

ইচ্ছে করে আকাশে উড়ি
দেখি, নেই যে ডানা
মনের পাখা মেলে দিলে
উড়তে তো নেই মানা।
ডানার জোরে যায় না উড়া
উড়ে মনের জোরে
পাহারও ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়
প্রবল মনের তোরে।

ইচ্ছেতেই উপায় হয়
আলসেমীতে হয় অনিচ্ছা
সময়ের কাজ সময়ে কর
শুনেছি কত কিচ্ছা!
ভাল কাজে মন দাও
মন্দ হতে দূরে
ভালো কথা গুণিজনে
শুধায় একই সুরে।

থাকলে মনে সৎ চিন্তা
সাফল্য আসে হাতে
সময়ের কাজ সময়ে করলে
সবই হয় সাথে সাথে।
ইচ্ছেটাকে লাগাও কাজে
কোরো না হেলা ফেলা
সেময়টাকে কাজে লাগাও
ডুবার আগে বেলা।

ভবের বাজার

জীবন কেন চলে না যে
সমান্তরাল ভাবে
কখনো কাটে মহা সুখে
কখনো বা অভাবে।
কখনো ভাসি সুখ সমুদ্রে
কখনো দুখ সাগরে
কখনো উড়ি সাত আসমানে
কখনো গহীন গহ্বরে।
কখনো ডুবি প্রেম জোয়ারে
কখনো জ্বলি বিরহে
কখনো জ্বালায় চিৎকার করি
কখনো যে যাই সয়ে।
কখনো পাইনা চাইলেও তোমায়
কখনো হাত বাড়ানোর আগে
কখনো পাইনা শত বিনয়ে
খুব যে কষ্ট লাগে।
আমি আর তুমি পাশাপাশি
থাকলে হতো ভালো
কেন বলো পারি রইতে
চেষ্টা করি চলো।
তুমি আমি থাকবো শুধু
থাকবে না আর কিছু
দুঃখ যেন নেয়না কভু
আমাদেরই পিছু।
ধ্বংস হোক পৃথিবীটা
সমাজ কি সংসারে
সমান্তরাল চলবো মোরা
পৃথিবীর বাহিরে।

মা ইলিশের আকূতি

এখন আমায় ধরো নাকো
ডিম ছাড়িবো আমি
কয়েকটা দিন সবুর করো
হবো অনেক দামী।
তোমার দেশের মাছ যে আমি
কোথাও যাবো নাকো
এ’কটা দিন দয়া করে
ধরা বন্ধ রাখো।
প্রজননের মৌসুম এখন
করবো বংশ বিস্তার
অন্য কাজ করো এখন
আমায় দাও নিস্তার।
কয়েকটা দিন পরে আমায়
পাবে ঝাকে ঝাকে
এ’কটা দিন ধরা বন্ধ করো
মেরো নাকো মা’কে।
তোমার দেশের অমূল্য ধন
রূপালী ইলিশ আমি
অন্য দেশে রূপা নইকো
সোনার চেয়ে দামী।
তোমায় আমি কথা দিলাম
বন্ধ রাখলে ধরা
সময় মত জাল ফেললে
জাল উঠবে ভরা!

চিন্তায় আছি!

রাজনীতিটা শুরু করি
মনের টানে
মাঝখানে ভেসে যাই
অর্থের বানে।
নীতি, আদর্শ আর
দেশ প্রেম ছিল
ক্ষমতার মোহ যে
সব কিছু কেড়ে নিল।
কিছু লোভ ছিল মোর
কিছু পরিবারের
কিছু ছিল গুরু নেতার
কিছু চাটুকারের।
এত কিছুর পরেও
কথার মায়াজালে
বোকা জনগণকে
দেই মোহে ফেলে।

ভাবি, বোকা জনগণ
বোঝে না যে কিছু!
একদিন জনগণ
নেবে ঠিকই পিছু!
সেদিনের চিন্তায়
কাটে দিন রাত
কবে যে গালে পড়ে
জনতার হাত!

উপহাস

লাস ভেগাসে আজ সারি সারি লাস
বিশ্ব মোড়লকে আজ করে উপহাস
গোলাগুলি হলেই বলো ইসলমী জঙ্গি
চেয়ে দেখো সন্ত্রাসী তোমারও যে সঙ্গী
দশজন মারা গেলে আমাদের দেশে
দাড়িয়ে যাও ‘যাত্রার বিবেকের’ বেশে
ফতোয়া দাও এদেশ জঙ্গির ঘাটি!
তোমার দেশও সন্ত্রাসের উর্বর মাটি
গরীবের সুন্দরী বউ সকলের ভাবী
অন্যের মাথায় লবন রেখে আর কত খাবি?
একজন সন্ত্রাসী পারোনা জ্যাতা ধরতে
ঠুসঠাস গুলি করে পার ঠিকই মারতে
খৃষ্টান বলে ওকে মেরে করো ছাফ
মুসলিম হওয়াটাকে ভাবো তুমি পাপ!
তোমার মুখে শুনলে মানবতার কথা
খিল খিল হাসি পায়, মনে জাগে ব্যাথা
তোমরাই হলে আবার মানবতার গুরু
তোমাদেরই হাত ধরেই সন্ত্রাসের শুরু।

যদি পারো

ভরা পেটে কয় সবে
ভালোবাসার কথা
এমন সঙ্গী পাওয়া
যায় যথা তথা।
আমি বলি খালি পেটেও
থাকলে মোর সাথে
তবেই রাখবো আমি
হাত তোমার হাতে।
অভাব যদিও ঢোকে
দরজা দিয়ে
ভালোবাসা পালাবে না
জানালা দিয়ে।
অভাব অনটন ঘরে
আসুক যতই
পাশে থাকবে তুমি
আগের মতই।
তবেই কথা দিতে পারি
থাকবো আমি তোমার
শত বাধা ভাঙ্গবো আমি
হবেই তুমি আমার।

যাও যে ছেরে!

ভুল বুঝে যাও যে ছেরে অভিমান করে
দিনগুলো যে কেমন কাটে যাইযে আমি মরে।
তুমি ভাবো তোমায় আমি গিয়েছি হয়তো ছেরে
ছারার কথা ভাবার আগে যাই যেনোগো মরে।
ভালোবাসা সব সময়ে সমান্তরাল যায় না
ঠোকাঠুকি হয় কখনো ওসব ধরলে হয় না!
তুমি থাকো অস্তিত্বে তুমি থাকো হৃদয়ে
ছোট খাটো খুনসুটি যেতে হবে সয়ে।
ভালোবাসি বলেই হয়তো এতোটা কষ্ট দেই
ভালোবাসার দাবীতেই সবটা মেনে নেই।
ছোট ছোট খুনসুটিকে এভাবে দেখলে হয়?
তাহলে কি এটাকে কেউ ভালোবাসা কয়?
তোমায় আমি ভালোবাসি সেটা তুমি বোঝ?
আমায় ছেড়ে তুমি কি এখন অন্য হৃদয় খোজ?
ভালোবাসা বুঝতে হলে সময় নিতে হবে
আমি কত ভালোবাসি বুঝবে তুমি তবে।

একটি হাত

তোমার হাত দুটো এমন কেন?
দেখতে আর পাঁচ-দশটা হাতের মতই!
পাঁচটা করে দশটাইতো আঙ্গুল।

সারা দিন কঠোর খাটুনি,
এটা ওটা করে কাটে বেলা
কঠোর পরিশ্রমে রুক্ষ, শুস্ক, মলিন হাত জোড়া
সংসার সামলাতে সামলাতে যতœ নেয়ার সময় কই!

হাতের ত্বক থেকে কোমলতা খসে খসে পড়ে,
নিরন্তর পরিশ্রমের ফাঁকে কখনো দেখি না
এতটুকু আক্ষেপ, এতটুকু হতাশা!

সেই হাত যখনই আমায় ছুয়ে যায়
এমন কোমলতা ভাবা যায় না!
সেই হাত যখনই আমায় ছুয়ে যায়
এমন মমতার আবরণ, বুঝি শুধু অনুভবে!
সেই হাত যখনই আমায় ছুয়ে যায়
স্বর্গীয় সুখ এনে দেয় হাতের তালুতে!
সেই হাত যখনই আমায় ছুয়ে দেয়
আমি মখমলের কোমলতার আবেশে জড়াই!
এ কেমন তোমার হাত!

সেই হাত আমায় ঘুম পাড়ায়
সেই হাত আমার ঘুম ভাঙ্গায়
সেই হাত আমায় অন্ন দেয়
সেই হাত আমায় আগলে রাখে
সেই হাত আমায় প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়
সেই হাত আমায় মোহিত করে
এ কেমন তোমার হাত!

সেই হাত আমায় বার বার কাছে টানে
সেই হাত আমায় বার বার ফিরিয়ে দেয়
সেই হাত আমার বিজয়ে উচিয়ে ধরে
সেই হাত আমার অধিকার আদায়ে প্রতিবাদী হয়
সেই হাত আমার বিপথ গামিতা রুখে দেয়
সেই হাত আমার শাসন করে
সেই হাতের সোহাগে আমি পূলকিত!

এ কেমন তোমার হাত!
দেখতে আর দশটা হাতের মতই!
পাঁচটা করে দশটাইতো আঙ্গুল।

আমি সেই হাতের আবেশে জড়িয়ে থাকতে চাই,
সেই হাত যেন আমার হাতছাড়া না হয়!
আমি সেই হাতের আবেশে জড়িয়ে থাকতে চাই!
সেই হাত আমার আজ বড় প্রয়োজন!!

দুঃখ বিলাস

অভাব যখন দুয়াড়ে এসে দাড়ায়
ভালোবাসা নাকি জানালা দিয়ে পালায়!
ভালবাসা যখন জানালা দিয়ে পালায়
দুঃখ-ব্যথা মগজে ঢুকে জ্বালায়!

দুঃখ যখন মগজে করে বিচরন
নানান বিষয়ে ভাবনায় ডোবে মন!
সৃজনশী কিছু তখনই হয় সৃষ্টি
সেই ‘কিছু’ হয় মধুর মত মিষ্টি!

বিরহ-ব্যথার কবিতা কিংবা গান
শুনি যখন মিলাই প্রাণে প্রাণ
মাথা নাড়াই তারই তালে তালে
হৃদয় ক্ষরণ গানেরই অন্তরালে।

সুখ ও বিলাশ হাতের কাছে এলে
সব ভুলে যাই ভালোবাসা পেলে
ভালোবাসা-বিত্ত চলে গেলে
মর্ম বুঝি দুঃখ কাছে এলে।

ভালোবাসা-সুখের সময় কভু
তোমায় স্মরণ থাকে নাযে প্রভু!
চাইনা এমন সুখ ও ভালোবাসা
দু’টোই মনে হয় যে সর্বনাশা!

দুঃখ তাইতো দুখী করেনা
আমায়, করে রাজার রাজা
ভালোবাসা ও বিত্ত চাই না
চাইযে দুঃখেরই সাজা।

হৃদয় পোড়ার গল্প

আমার সাথে তোমার- দেখা হঠাৎ করে
ছেড়ে অন্যের ঘর- এসেছো আমার ঘরে
তোমার ছিলো অতীত- আমারও আছে স্মৃতি
নিজেদের প্রয়োজনে- হয়েছে মোদের প্রীতি
প্রথম প্রথম ফোনে- ভাইবার, ইমো লাইভে
থাকতে তুমি যেমন- আমি যেমন চাইযে
সকাল, বিকাল, রাতে- থাকতে তুমি সাথে
হাটতে তুমি সারাক্ষণ- হাতটি রেখে হাতে
মনটা যখন চাইতো- করতে দেখা তুমি
ঘাটতাম আমি হৃদয়- ভেবে নিজের ভূমি!
প্রথম প্রথম তোমার- আমার চাওয়া পাওয়া
ছিল শুধুই যেন- যৌবনেরই ধাওয়া
আস্তে আস্তে তুমি- আমার দিকে ঝুকলে
হৃদয়ে সিধ কেটে- পোক্ত করে ঢুকলে
আমিও এখন তোমায়- দেখছি অন্য চোখে
ভুগছি এখন আমি- তোমার প্রেমের রোগে
ভালোবাসি তোমায়- তুমিও বলো, ভালোবাসি
তখন, যখন তুমি- আসতে আমার কাছাকাছি
বলতে কত কথা- জড়িয়ে আমায় বুকে
দেখাতে শত স্বপ্ন- থাকবো মোরা সুখে
সারা জীবন দুজন- থাকবো পাশাপাশি
দুঃখ যতই আসুক- করবো হাসাহাসি
ছাড়লে কভু তোমায়- যাবোনা কারো কাছে
নেবোনা হৃদয়ে কাউকে- সে ক্ষমতা মোর আছে
কাটিয়ে দিবে জীবন- তুমি ছাড়া একা একা
করবো না আর কভু- কারো সাথে দেখা!

হঠাৎ করে তোমার- মনে কি যে হলো
আমায় ছাড়াই থাকো- কেমন করে বলো?
বাশের সাকো থেকে- উঠলে সেতুর উপর
হৃদয় ফুটো করে ঢুকলে- অন্য হৃদয়ের ভিতর
এক মূহুর্তে তুমি- ভুললে অতীত কথা
দিলে তুমি আমায়- গভীর ক্ষত, ব্যাথা
দোষ ছিলো কি আমার- বুঝতে দিলে নাযে
ভুলতে তো পারি না- ব্যস্ত থাকি যতই কাজে
সব কিছুকে ফেলে- আমি বেসেছি তোমায় ভালো
আধার আমায় দিয়ে- তুমি বেছে নিলে আলো
কয়লা পুড়ে গেলেও- উড়ে কিছু ছাই
আজ আমার হৃদয় পোড়ে- দেখার কিছু নাই।

লেবাস

জাতিগত দাঙ্গা করে যারা অন্ধ
মানবতার দ্বার হয় তাদের জন্য বন্ধ।
মানুষে মানুষে ভেদ সৃষ্টি করে যারা
দাঙ্গা হতে স্বার্থ আদায় করে তারা।
ধর্মের লেবাসে জানোয়ারের বাস
তাদের কারনে আজ এত সর্বনাশ।
লেবাসের আড়ালে করে বোমা গুলি বহন
হিংসার আগুনে করে সমাজকে দহন।
ছবকের নামে শোনায় শান্তির কথা
বুঝতে চায়না কভূ মানুষের ব্যথা।
ছবকের নামে শোনায় শান্তির কথা
বুঝতে চায়না কভূ মানুষের ব্যথা।
ধর্মের নামে করে অধর্মের ব্যবসা
এদের চেয়ে উত্তম যাদের বলি বেশ্যা।
ঘটিতে বিদ্যা কম জাহির করে বেশি
ওদের কার্ম দেখে পায় কেবল হাসি।
নিজেদের স্বার্থ মত করবে বয়ান
সুযোগ পেলেই নেবে নিরিহর প্রাণ।

এদের হাত থেকে থাকিস জুয়েল দুরে
গাইবি গান তুই মানবতার সুরে।

বিজয়

বিজয়ের মাসে চলো, বিজয়ের কথা বলি
বিজয়ের মাসে চলো, হাত ধরে পাশাপাশি চলি।

হিংসা, ঘৃনা ভুলে, হৃদয়ের দরজা খুলে
হানাহানি পাশে তুলে, ভালোবাসি ফুলে ফুলে
অন্যায়-অবিচার, করে দিয়ে ছারখার
দুর্নীতি করে যারা, ওদেরকে মার মার
শাসকের রূপে যারা, চুষে যায় রক্ত
তাদের বিরুদ্ধে এসো, করি মুঠো শক্ত
ঘুর আর ধর্ষনে, তফাৎ ভাষাগত
এদের হাতে নিপিড়ীত, হচ্ছে মানুষ কত
অন্যায়-অবিচার দেখে, মুখ যদি লুকালে
কচ্ছপের মত যদি, মুখটাকে ঢুকালে
ক্ষমা করবে না কভু, তোমাকে সমাজ
সে কথাটা তুমি, ভুলো নাকো আজ।

বিজয়টা কিন্তু, এমনিতে আসেনি
হাজারো লোক ছিলো, দেশ ভালোবাসেনি
লক্ষ মানুষ ছিলো, প্রাণের মায়া ছেড়ে
শত্রুর সামনে তারা, গিয়েছিলো তেড়ে
হাত ছিলো খালি, শক্ত মনোবল নিয়ে
মাটি রক্ষার শপথ নিয়ে, পড়েছে ঝাপিয়ে
রক্ত-ঘাম সেদিন, এক করেছিলো যারা
বিজয়ের দাবীদার, হবেই আজ তারা।

বিজয়ের মাসে চলো বিজয়ের কথা বলি
বিজয়ের মাসে চলো হাত ধরে পাশাপাশি চলি।

১৪ ডিসেম্বর স্মরণে

কোন ভাবেই পেরে উঠছিলে না তোমরা, চেষ্টা করেছিলে অনেক,
সব পথ মাড়িয়েছো, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সামরিক, শাসন-শোষন
এযে এক অদম্য জাতি, দৃঢ় চেতা, শক্ত কঠিন মনোবল।
ভাষা কেড়ে নিতে গিয়ে প্রথম হোচট খেয়ে বুঝে গেলে
এভাবে হবেনা! তার পর নানা কৌশল, জড়ো করলে সেনা
গ্রামের পর গ্রাম উজার করলে পুড়িয়ে, ঘরের মা বোন
শিশু, বৃদ্ধা কাউকেই বাদ দিলে না, রাখতে চাইলে বিষাক্ত বীজ
তোমাদের পূর্ব পূরুষের জারজ সন্তানেরাও ছিলো পূর্ব থেকেই
তারাও বাড়িয়ে দিয়েছিলো তাদের কালো হাত, বিষাক্ত মগজ
কৃষকের-মজুরের ইস্পাত শক্ত হাত, শিক্ষক-ছাত্রের শাণিত মেধা
যখন এক হয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিলো নিরস্ত্র হাতে তোমার সশস্ত্র
হায়েনাদের বিরুদ্ধে, রুখে দাড়িয়েছিলো বুক পেতে মাটিকে রক্ষায়
তখন তুমি আস্তে আস্তে বুঝে গেলে, এ মাটি তোমার হবে না
এ মাটিতে দাড়াবার শক্ত পা তোমার নেই, নেই মনোবল।
তখন তোমার মোটা মাথায় একটা মোটা বুদ্ধির জন্ম দিলো
গ্রাম পুড়িয়ে, হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, নির্যাতন সব করেও
যখন বাঙ্গালির হৃদয় টলাতে পারছো না তাহলে কি করা যায়?
তোমার পূর্ব পূরুষের বিষাক্ত ফোটায় জন্ম নেয়া জারজদের
বুদ্ধিতে ও নীল নকশায় দেশের মেধাটাকে বিনাশ করার চিন্তা!
যেই ভাবা সেই কাজ, রাতের আধারে এ মাটির শ্রেষ্ঠ সন্তান
শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, বেছে বেছে শ্রেষ্ঠ সন্তান
বুদ্ধিজীবীদের ধরে ধরে চালালে গুলি, হাত-পা বেঁধে
বেয়নেটের খোঁচায় খোঁচায় বিদীর্ণ করলে শ্রেষ্ঠ সন্তানের হৃদয়।
তোমরা যে চির আহাম্মকের জাতি, আবারো প্রমান করলে তা
হাজারো প্রদীপ জ্বালাতে একটা প্রদীপই যে যথেষ্ট
যাদের সাথে পেড়ে উঠোনি তারা আজ সৃষ্টি করেছে হাজারো
মেধাবী সন্তান, তাদের মেধার সাথে আজও পেরে ওঠোনা
তোমরা পারো শুধু জঙ্গি, দুর্নীতিবাজ সৃষ্টি করতে
আজ দেখ, শিক্ষায়, ক্রিড়ায়, চিন্তায়, চেতনায় কতটা
এগিয়ে গেছি আমরা, কেবলই দৃঢ় মনোবল, শাণিত মেধার কারনে।
অধিকার

দেশের মুখে মাখছে কালি
জনতাকে দিচ্ছে গালি
আন্দোলনকে বলছে ওরা
গণতান্ত্রিক অধিকার।
জনগণ, তোমার কি আছে
ফেরাবার কোন অধিকার?

গাড়ির গায়ে, নারীর গায়ে
মাখছে কালি চালকের গায়ে
নিষেধ গুরুর তবুও তোমরা
কেন, চলো-চালাও গাড়ি?
তোমাদের কি নেই সরম-লজ্জা
কোন দেশেতে বলো তোমার বাড়ি?

মানুষ মারবো, পিষে দেব
আদালত হতে জামিন নেব
লাইসেন্স নেব রং চিনেই
এটা আমাদের অধিকার।
জনগণ তোমার লাফাও কেন
এতে বলো ক্ষতিকার?

এই দেশেতে শক্তি যার
পূরো দেশটাই হচ্ছে তার
দুর্বল জনগণের কি
আছে কোন অধিকার?
জ্ঞনীরা মার খাবে, মূর্খ চালাবে দেশ
এটাই এখন তাদের অধিকার।

প্রশ্ন

বিজয় তোমার বয়স কত জানতে চাইলে তুমি
বললে আমায়, একাত্তরে ভূমিষ্ঠ হই আমি।
গুনে দেখ, পয়তাল্লিশ বসন্ত পেরিয়ে গেছি
ছিচল্লিশে পা দিয়েছি, এইতো বেশ আছি!
দীর্ঘ এ চলার পথে, দেশ চলেছে উল্টো রথে
হিংসা, ঘৃনা, ষড়যন্ত্র, সৈর শাসন, কভু বিপথে
এর পরেও কথা আছে, নতুন পুরাতন প্রজন্ম
লালন পালন করে আমায়, সার্থক আমার জন্ম
যখন দেখি আমার নিশাণ, উচিয়ে ধরে রাখে
তখন আমার প্রাণটা বাঁচে, ষড়যন্ত্রের বাকে
তোমরা যখন মাথা উচু করো, বিশ্ব দরবারে
তোমাদের বিজয় প্রচার পায় বিশ্ব দরবারে
আমি তখন সতেজ হই, গর্বিত হই, আপ্লুত হই
রাজনীতির নামে যখন শুরু হয় নোংরা খেলা
আমার তখন সময় অস্থির কাটে সারা বেলা
আমায় যারা জন্ম দিলো ত্যাগ, রক্ত, ঘামে
তাদের ভুলে যাও যখন ক্ষমতারই নামে
তাদের হাতে দাও যখন বিজয়ের পতাকা
হৃদটা যে খালি হয়ে যায়, লাগে ফাঁকা ফাঁকা
মা বোনেদের ইজ্জত নিয়ে খেলেছিলো যারা
ক্ষমতার লোভে পরম মিত্র হতে পারে তারা!
এর জন্যই আমার কি হয়েছিলো জন্ম!
তোমাদের কাছে এ প্রশ্ন থাকবে আজন্ম।

পাখিরে….

তুমিই আমার পরান পাখি
উড়ে গেলে, কেমনে রাখি?
বুকের ভিতর যতন করে
মনের ছোট্ট গোপন ঘরে
লালি পালি আদর করি
চোখের আড়াল হলেই মরি।
কথা বলো আমার সুরে
যাওনা ছেড়ে কভু দূরে
তুমি আমায় ভালোবাস
ডাকলে কাছে চলে আসো
বাঁধন যদি যাওগো কেটে
বুকটা আমার যাবে ফেটে
এত ভালো বাসার পরে
কেমনে যাবে আমায় ছেড়ে?
আমার আগে তোমায় কভু
যেতে যেন না দেয় প্রভু
তোমায় নিয়ে প্রভুর কাছে
আমার এক প্রার্থনা আছে
আমার আগে তোমায় তুলে
না নেয় যেন প্রভু ভুলে!
তোমায় ভালোবাসি কত
জানে প্রভু আমারই মত
জানার পরেও শিকল ছিড়ে
কেমনে নেবে তোমায় কেড়ে?
শিকল কাটা পাখি তুমি
সে কথাটা জানি আমি
তবুও কেন ভুলছি মায়ায়
বোঝে না এই মাটির কায়ায়
বেহায়া জুয়েলের এ মন
তোকেই চায় যে সারাক্ষণ।
সেরা সম্পদ…

শ্রমিক আমি, কৃষক আমি, আমি দিন মজুর
আমায় তোমরা ঘৃনা করো, করো যে দূর দূর!
সুযোগ পেলে দাও যে গালি, কামলা, গাধা বলে
আমাদেরই রক্ত তোমরা, চোষো সুযোগ পেলে
হার ভাঙ্গা খাটুনি করি, পেটের দায়েই পড়ে?
আমাদেরও আছে মা-বাপ, স্বজন ঘরে ঘরে
বাপ দাদারই পেশায় আছি, পেশা ভালোবেসে
কাজটা করি মনের টানে, করি খেলে-হেসে
রোদে পুরি, ভিজি বৃষ্টিতে, দুঃখ নাই তো মনে
চাকা সচল রাখতে চেষ্টা, করি যে প্রাণপনে
আমার শস্য খাওযে তুমি, আমারই প্যান্ট পড়ে
বিবি বাচ্চা নিয়ে সুখে, বাস করো যে ঘরে
কখনো কি দেখেছো ভেবে, আমার অবদান
তোমার একটু উপেক্ষাতে, হয়ে যাই যে ম্লান!
আমার রক্ত-ঘামের পন্যে, তোমার ভোগ-বিলাস
তোমায় সুখি রাখতে আমরা, হই কখনো লাশ
বিদ্যা বুদ্ধির অভাব আছে, হয়তো তোমার চেয়ে
তবুওতো হাত পাতি না, তোমাদের কাছে যেয়ে
দূর্নীতি কি, ঘুষ-উৎকোচ, নাইতো মোদের জানা
বাপ-দাদারা মন্দ কাজে, বলছে যেতে মানা
চেষ্টা করি তাদের শিক্ষা, মানতে হারে হারে
লজ্জা পাইনা তাইতো মোরা, বিজয় কিংবা হারে
শিক্ষা নিয়ে কি শিখিলে, হিংসা, ঘৃনা, লোভ?
তোমাদেরই কান্ড দেখে, জাগে মনে ক্ষোভ!
মানুষ ঠকাও কেমন শিক্ষা পেলে তুমি বলো?
তোমাদেরকে কেমন করে, মানুষ বলি বলো?
কারো আছে ক্ষমতার লোভ, কারো লোভ টাকার
আমার নেই কোনই লোভ, নেই কোন হাহাকার
জুয়েল বলে কৃষক, শ্রমিক, মজুর হলো যারা
আসল জ্ঞানী, দেশ প্রেমিক, সেরা সম্পদ তারা।
রাস্তা

রাস্তা দিয়ে মানুষ হাটে
যায় বাজারে, যায় যে হাটে
চলে গাড়ি, চলে লড়ি
নানান পণ্য ভরি ভরি
অ্যাম্বুলেন্স আর বিয়ের গাড়ি
বরযাত্রি সাড়ি সাড়ি
গরু বোঝাই, ময়লা নিয়ে
যায়যে সবাই রাস্তা দিয়ে।
রাস্তায় পড়ে মরে কত
রাস্তাই বাঁচায় জীবণ শত
রাস্তা ছাড়া জীবন চলা?
সেই কথা আর লাগে বলা!

রাস্তা তোমায় পথ দেখাবে
গন্তব্যে পৌছে দিবে
রাস্তা ধরেই যাবে চলে
মাভৈ মাভৈ বলে বলে
রাস্তা যদি না হয় ভালো
জীবণ হয়ে উঠবে কালো
রাস্তার তাই যতœ নিও
ভেঙ্গে গেলে জোড়া দিও।

জুয়েল বলে,
রাস্তা, এখন আর রাস্তা নাই
চললে মনে হয় নদী দিয়ে যাই!
উথাল পাথাল ঢেউ কোমড় করে ব্যাথা
কার কাছে বলি বলো এ দুঃখের কথা?

শীত

কনকনে শীতে বাইরে যেতে
চায় নাতো আমার মন
তার পরেও জীবিকার টানে
বাইরে যায় কত জন
লেপ মুড়ি দিয়ে রিমোটটা নিয়ে
শুয়ে শুয়ে দেখি শুধু টিভি
কারো কারো ঘরে না খেয়ে বসে
আছে তার বাচ্চা ও বিবি
জড়ো সড়ো হয়ে কাপি বসে আমি
উঠে রিক্সার সিটে
কনকনে শীত চালকের লাগে
বুকে, গায়ে আর পায়ে-গিটে
অভাবের তাড়নায় তীব্র শীতেও
ঘাম নয় ঝড়ে পড়ে রক্ত
দুমুঠো ভাতের অভাবে নামে রাস্তায়
আমার কাছে কাজটা শক্ত
নাইটগার্ট আবু ভাই, পৌষ আর মাঘ নাই
করে চলে জীবনের ডিউটি
ঠোট, গাল ফেটে যায়, তকটা টানে
ভাবে না সে কিসে হবে বিউটি
আড়তে মাল আসে গভীর রাত করে
বাবুদের চাহিদা মেটাতে
মাল নামে ঘাড়ে চড়ে, শ্রমিকের ঘাম ঝড়ে
সংসারের মুখে হাসি ফোটাতে
কারো আছে সুয়েটার, শাল আর মোটা কোট
বিছানায় লেপ আর বিদেশী কম্বল
কারো ছেড়া গেঞ্জি, পুরাতন লুঙ্গি, লেপ নেই
ছেড়া মোটা কাথাটাই সম্বল
গভীর রাতে কেউ ল্যাম্পপোষ্টের নিচে
দাড়িয়েছে খদ্দেরের আশায়
কেউবা ঠাটে বাটে, চলে গেছে পাজেরোতে
ক্লায়েন্টের দামী ফ্ল্যাট বাসায়
কারো ঘড়ে বইছে হিটারে উষ্ণতা
এটাও মনে হয় কম পাওয়া
কারো ঘড়ে বইছে বেড়ার ফুটো দিয়ে
উত্তরের কনকনে হিমেল হাওয়া
এভাবেই চলছে ধনী আর গরীবের
জীবন আর জীবিকা
কারো ঘড়ে রাশি রাশি পড়ে আছে ধন
কারো ঘর একদম ফাঁকা
বৈশম্যহীন সমাজটা গড়তে
কেউ কেউ ধরে নানা স্লোগান
সন্ধা ঘনিয়ে এলে স্লোগান পিছে ফেলে
চিয়ার্স বলে শুরু করে পান
জুয়েল বলে,
শীতের তীব্রতা কমাতে চাইলে
তাকাও একে অপরের দিকে
নয়তোবা সমাজটা একদিন ঠিকই
হয়ে যাবে একদম ফিকে।

রাজা

সংসার আমার ভাল্লাগে না
ভাল্লাগে না কাজ
তবুও ভাবতে ভালো লাগে
আমি মহারাজ।

অলস আমায় বলে সবাই
অলসে মোর সাথী
ভালো লাগে ঘুমকে আমার
ঘুমাই দিবস রাতি।

কারো ক্ষতি করি না ভাই
লাগিনা কারো কাজে
তবুও দেখি অনেকেই আমায়
ডাকে মাঝে সাজে।

পারলে কারো কাজে লাগি
লাগিনা পিছনে
সহজ সরল মনটা আমার
কালি নাই তো মনে।

ব্যাথা দিলে সহ্য করি
নিরবে যাই সয়ে
প্রতিঘাত করি না কভু
প্রতিবাদী হয়ে।

মনে হয়তো প্রশ্ন তোমার
আমি কোথায় রাজা?
নিজের একটা ভূবন আছে
তারই মহারাজা।

উপলব্ধি

বিপদে চেনা যায় বন্ধু
ভোটের সময়, ভোটর
কলি দেখে বুঝি কি ফুল
সময় হলে, ফোটার।

ভিত্তি দেখে যায় যে বুঝা
বড় হবে কতটা, ইমারত
অনেক কিছু যায় না বুঝা
বিধাতার কত, নিয়ামত।

শিােনাম দেখে যায় যে বুঝা
ভিতরে ঘটনা কি, আছে
মানুষের মন যায় না বুঝা
যতই থাকুক, কাছে।

সুরটা শুনে যায় যে বুঝা
গানটা কেমন, হবে

বসন্ত

তোমার বসন্ত আজ
আমার চৈত্র মাস
বিছানায় একা করি
এপাস ওপাস।

শীত আসে, বর্ষা যায়
বুঝি না তফাৎ
আনন্দে কাটে তোমার
প্রতি দিবস রাত।

ঝড় বাদল চাইনা আমি
তবুও নেয় পিছু
আমায় ছেড়ে অন্যকে নিয়ে
ভাবো কতো কিছু!

আমিতো চাই আমারও হোক
ফাগুনের বসন্ত
তোমায় নিয়ে কাটাই আমি
দিয়ে প্রেম অনন্ত।

তোমায় আমি চাই বুঝাতে
আমার মত করে
থাকো তুমি আমার হয়ে
পুরো হৃদয় জুরে।

পীর বাবা

পীরের পিরপিরানি
সেকথা আমি জানি
বোঝে না যারা নাদান
পীরের কাছে তারাই যান।

পীর বাণিজ্যে লাভ বেশি
নাদানেরা গিয়ে খুশি
পশু পেলে পীর খুশি
নাদানরা খায় খইল ভূষি।

একেক পীরের একেক বানী
সবার মধ্যেই শয়তানী
অন্ধরা গিয়ে খায় ধোকা
নাদানেরা তাইতো বোকা।

হাসর কালে তোমার পীরে
একবারও চাইবেনা ফিরে
ছুটবে তিনি নিজের জন্য
তার খাতা যে পুরাই শুন্য।

পীরের কাছে না গিয়ে
পরে থাকো কোরাআন নিয়ে
সুপারিশ চাও? বলছে কবি-
করবে মোদের শেষ নবী।

চাকরিরে!

বাড়ি থেকে ডেকে এনে দিতো আগে চাকরি
পুড়তো না কাঠ খড় পুড়তো না লাকড়ি।
চাকরি চাইলে এখন করে দুর দুর
আবেদন চাইলে হয়ে যায় ভুর।

চাকরির বাজারটা এখন বড়ই চড়া
পায় না মেধাবী আর যারা আধ মরা।
পাচ্ছে যার আছে ক্ষমতা আর টাকা
হাজার লিখেও দেখো অনেকের খাতা ফাকা।

দর দাম উঠছে জ্যামিতিক হারে
দুঃখের এ কথা বলো বলি আজ কারে?
যার কাছে বলবো সেই ঘোরে দাতার পাছে
আমাদের যাওয়ার কি যায়গা আর আছে?

মেধা আর যোগ্যতা করে যাচাই
প্রার্থীকে করবে কর্তারা বাছাই।
এই দেশে সেই দিন আসবে আর কবে
টাকা নয় মেধার গুণে চাকরিটা হবে?!

কষ্ট

আকাশ ভরা জোৎস্নার আলো মনে কষ্টের পাহাড়
ভাল্লাগে না জোৎস্নার আলো ভাল্লাগে না আহার।

ভাল্লাগে না প্রকৃতি আজ ভাল্লাগে না পাখি
হৃদয় ভরা ব্যাথার পানি ঝড়ছে দিয়ে আখি।

ব্যথার বিষে কাতর আমি প্রাণ যে ওষ্ঠাগত
বিনিদ্র রাত কাটাই আমি হাজার শত শত।

সব রোগেরই ঔষধ আছে ব্যথার ঔষধ নাই
আমার ব্যথা বোঝার মত সঙ্গী কোথায় পাই?

ভালোবাসি পরান দিয়ে হৃদয় উজার করে
বুঝলাম না কেমনে ঢুকলো কষ্ট আমার ঘরে।

হৃদয় ছিলো হালকা আমার উড়তো তুলার মত
কেমন করে দিলে তুমি এই হৃদয়ে ক্ষত?

আশীষ আমার তবুও তুমি আনন্দেতেই থাকো
বিধাতা তুমি কষ্ট থেকে ও’কে দূরে রাখো।

হে বীর

আমি যুদ্ধ দেখিনি, আমি বিজয় দেখিনি
আমি এখন ভোগ করছি বিজয়ের স্বাদ।

দেশে যখন প্রচন্ড লড়াই, একটি পতাকার জন্য
দেশে যখন প্রচন্ড লড়াই, একটি স্বাধীন মানচিত্রের জন্য
দেশে যখন প্রচন্ড লড়াই, মাথা উচু করে দাড়াবার জন্য
আমি তখন ভূমিষ্ঠই হইনি
আমার জন্ম স্বাধীনতার সাত বছর পর।

এর পর আমি আস্তে আস্তে হাটতে শিখেছি
একটু একটু কথা বলতে শিখেছি
দাদির কোলে বসে গল্প শুনেছি
গল্পগুলো মনে ধারণ করতে শিখেছি, বুঝতে শিখেছি
তখন বুঝেছি, স্বাধীনতার মানে কি, কেন করেছে যুদ্ধ।

অনেকেই বলে, শোনা কথা বিশ্বাস করতে নেই
আমি বলি যুদ্ধের কথাগুলো, যোদ্ধার কথাগুলো
বিজয়ীনির কথাগুলো, ধর্ষিতা বীরঙ্গনার কথাগুলো
লড়াকুর কথাগুলো, জীবন বাজীকরের কথাগুলো
কি’করে অবিশ্বাস করি!

একটি ডাকে যখন মানুষ পাখির মত ঝাপিয়ে পড়ে
অস্তিত্ব রক্ষায় যখন মানুষ অকাতরে প্রাণ দেয়
দিনের পর দিন খেয়ে, না’খেয়ে, নিদ্রাহীন লড়ে যায়
আমি সেই লড়াকু বীরের কথা কিভাবে অবিশ্বাস করি!

পাকিস্তানী হানাদার এদেশে এসেছিলো
ধর্মের লেবাশ পড়া হিংশ্র জানোয়ারের বেশে
ধর্মীয় মিলের ছুতোয় অনেকেই দিয়েছে সহচার্য
জানোয়ারের লোমশ হাতে, নিজের কন্যাকে
পরশীর কন্যাকে, আর মালাউনের কন্যা হলেতো কথাই নেই!
ক্যাম্পে ঠেলে দিয়ে বাইরে বসে শুনেছে ভায়োলিনের করুন সুর
বিনিময়ে জুটেছে লুটপাটের অনুমতি, জানোয়ারের উচ্ছিষ্ট ক্ষমতা
রাজাকার, আলবদর, পাকি দোসররা হা করে ছিলো
জানোয়ারের বিষর্জিত মুত্র পানের আশায়, চাতকের মত।

একটি সভ্য জাতি কখনো কি অসভ্য হতে পারে?
একটি অসভ্য জাতি কি কখনো সভ্য হতে পারে?
আজো মসজিদে মসজিদে বোমা মাড়ে, স্কুলে বোমা মারে
সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করে পাকি জানোয়ারেরা
ওদের হাত থেকে বাদ যায় না কিশোরী মালালারা
ওরা আজো ধ্বংসলীলায় মেতে আছে নিজভূমে
মোটা আটার রুটি আর ছাগলের মাংস খেয়ে
বরবর জাতি বড় বড় করছে হিংশ্র দন্ড
মানবী না পেলে মুরগী আর বড়কীর উপর চালায়
পাষবিক নির্যাতন, ধর্ষন, মিটায় কামত্তেজনা
সেই জাতি ভালো হবে না শত বছরেও!
যেমনটি হয়নি ওদের দোসর, ধর্মের লেবাসীরা এদেশে!

জানোয়ারদের পরাস্ত করে স্বাধীনতা এনেছিলে হে বীর
আমরা তোমাদের ভুলিনাই, ভুলবো না
দোসরদের সাথে আজো আমরা লড়ছি
তোমাদের দেখানো পথে হাটছি আমরা
আমরা যে বীরের জাতি, লড়ছি আমরাও
লড়ে যাব, যুদ্ধ চালিয়ে যাব নিরন্তর
চলবোই, যতক্ষণ না লক্ষে পৌছাই।
তোমরা যে আমাদের প্রেরণার হাতিয়ার।

সাবধান !

ধর্ষন বেড়েছে, বেড়েছে প্রচার
প্রচারে জেনেছি, হলো কতটা প্রসার।
পারছি না রুখতে, থামছে না কেন?
ধর্ষন এখন, উৎসব যেন!

নৈতিক অবক্ষয়, না পর্ণের প্রভাব?
বদলাচ্ছেনা যেন, ধর্ষকের সভাব।
চেষ্টা চলছে, থামানোর জন্য
ফলাফল দেখি, শুধুই শুন্য।

ধর্ষনের পরপরই হচ্ছে আপোষ
ধর্ষক-ধর্ষিতা মেনে যায় পোষ।
পোষ মানে প্রশাসন, মানে দেখ সালিস
মাথায় হয়েছে ঘা, মলম পায়ে হচ্ছে মালিশ।

দোষ দেই চলনের, দোষ দেই পোষাকের
দোষ দেই পুলিশ আর দোষ দেই শাসকের
দোষ ঢুকে গেছে আজ ধর্ষকের মনে
মুক্তা ছরাচ্ছি সবাই আজ উলু বনে!

সামাজিক, নৈতিক অবক্ষয় কেন?
সেদিকে কারোরই নজর নেই যেন!
বলে কবি, লাগাম ধরতে হবে এখনি
নইলে সমাজের কপালে আছে শনি!!

ফ্রেশ ক্লাব

আমি একটা ফ্রেশ ক্লাব করতে চাই
যে ক্লাবে আমাকে দিতে হবে
সভাপতি অথবা সম্পাদক পদটি
বছর বছর নয়, আজন্ম সময়ের জন্য
আমি কাজ করি বা না করি, তবুও!

আমি সম্পাদকের রাবার সিল দিয়ে
হবো কোটিপতি, সমাজে নামজাদা
তোমরা হয়তো এখনি বলবে, হারামজাদা!
আমি সভাপতির পদ ভাঙ্গিয়ে
ঠেকাবো পিঠের জুতার বাড়ি
তোমরা হয়তো আমায় দিবে আড়ি!

আমাকে তোমরা মানুষ বলো, অথবা অমানুষ
তাতে আমার কিছুই যায় আসে না
আমার পিত্তথলি কেটে ফেলেছি সেই কবে!
আমি থাকতে চাই ফ্রেশ ক্লাবের কর্তা হয়ে।

আমি একটা ফ্রেশ ক্লাব করতে চাই
ক্লাবের সদস্যদের আমি নিয়ন্ত্রন করবো না
করবো না কল্যানে কোন কাজ
আমি দাড়াবো না তোমাদের বিপদে
রুখবো না যদি তোমরা যাও বিপথে
আমি কাটবো না, করবো না ঠুসঠাস
আমি যে নখদন্তহীন বাঘের মত!
আমায় রেখো কর্তা করে আজন্ম।

দশা

সড়কের দশা যেমন চালকের একই!
একই পথে সকলে চলছেযে দেখি!
রাস্তার ফিটনেস মেয়াদ উত্তীর্ণ
গাড়ির বডির দশা রোগা জির্ণ-শীর্ণ।
নেতাদের মগজ খেয়েছেযে পোকে
হাহুতাশ করি আজ সেই শোকে।
কারো কথা কেউ মানছে না আজ
ইচ্ছে মত সবাই করছেযে কাজ।
আইনের ফাঁকে ঢুকে যায় সব
আমরা বোকারা শুধু করি কলরব।
সারা বিশ্ব আজ চলছে যেদিকে
আমরা এগুচ্ছি ঠিক তার উল্টো দিকে।
মানবতার কথা আজ মাতালের বচন
অসম্ভব হচ্ছে আজ আমাদের বাঁচন।
এ থেকে মুক্তি কবে বলো পাবো?
সব কথা বাদ দাও! একথাটা ভাবো।

সুরা

এরাবিয়ানে খায় জিন, ইন্ডিয়ানে রাম
হগলে মিলে করে একি কাম?
কোনের টেবিলে বাবু খায় পেগ হুইস্কি
হালকা হয়েছে মাথা! খেয়ে হাসে মুস্কি।
ভৎ করে ভদকা ঢালছে গ্লাসে
অনেকেই গিলছে দেখো আশে পাশে।
শম্পার হাতে দেখ শ্যাম্পেন ধরা
খেলে বেশি করো না খুব নড়াচড়া।
ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ডি নিয়ে হাতে হাতে
চিয়ার্স চিয়ার্স ধ্বণি করে দেখো রাতে।
সুরের তালে তালে চলে সুরা পান
কারো আসে বমি কারো কাছে প্রাণ।
বড় বড় মগ নিয়ে ভরে নেয় বিয়ার
কারো সাথে বান্ধবি কারো সাথে ইয়ার।
এখানেই শেষ নয় মদিরার সাথে
সুরের তালে নটি নাচে প্রতি রাতে।
এটা ওটা খায় আর করে ধুমপান
আসক্ত হলে পরে চলে যায় প্রাণ।

একদিনের বাঙ্গালী

একদিনের জন্য হচ্ছি বাঙ্গালী
পান্তা খাই যেন ‘খাচ্ছে কাঙ্গালী’।
সুটেড ব্যুটেড হয়ে চলি সারা মাস
সব রং পাঞ্জাবীতে লেগে গেছে আজ।
ঘরে-বাইরে সাজি সালোয়ার কামিজে
আজ পড়েছি শাড়ি বৈশাখী আমেজে।
বাসন্তী রং-শাড়ি পড়ে ললনারা মেলায় যায়
আচার, ফুচকা আর ঝালমুড়ি কিনে খায়!
ঘোড়া-হাতি পাঙ্খা কিনে ডুলা উরকী
হাটে আর কেউ খায় কিনে মোয়া মুরকি।
লাল লাল চরকা আর, কিনে বাশের বাসি
আজ আমি বাঙ্গালি বাংলা ভালোবাসি!
সারা বছর শুণি শুধু রক আর হিনদি
বাউল গানের লাগি আজ খুব দরদি।
কবিতার পাঠ হয়, চলে পালাগান
উজার করে আজ দিতে পারি প্রাণ!

কবি জুয়েল বলে, ভন্ডামি ছেড়ে
বাঙ্গালীত্ব আকড়ে ধর, নিয়ে যাচ্ছে কেড়ে।
একদিনের নয়, হও কায়মনে বাঙ্গালী
সমৃদ্ধ হবো মোরা, হবো না ‘কাঙ্গালী’।

ডাষ্টবিন থেকে বলছি মাগো

মায়ের মত দরদী নাই যদি হয় ভবে
আমাকে ফেলে রেখে গেলে কেন মা তবে?

দশটি মাস গর্ভে রেখে ভোগ করলে যন্ত্রনা
ফেলে রেখে চলে যাওয়া কেমন প্রবঞ্চনা!

লালন পালন না করিলে গর্ভে কেন ধরলে
দুনিয়ার আলো দেখিয়ে মাগো ডাস্টবিনে কেন ছুড়লে?

ময়লাস্তুপে কষ্ট পেলাম মাগো, তুমি কি পাওনি?
গর্ভে ধারন করেও কি মা, আমাকে চাওনি!

রক্ত ঝরলো চুইয়ে চুইয়ে কামড়ে দিলো পোকা
আমি কিন্তু দেইনি মাগো কে দিয়েছে ধোকা?

ডাষ্টবিন থেকে বলছি তাদের লালনে নাই ইচ্ছে যাদের
কোরো না আর গর্ভে ধারণ হাত জোর করে করছি বারন
জন্ম দিলে কোরো লালন আদর যতেœ কোরো পালন।

আনন্দে মেতে ফুর্তিকালে হুস কি ছিলো না?
প্রশ্নটা করার মত মা সময়ও দিলে না!
অনেক কষ্ট বুকে নিয়ে গেলাম মাগো চলে
এমন কর্ম কেউ কোরোনা যাচ্ছি তোমায় বলে!

মা’তো ভবে আরো আছে ওদের দিকে দেখো
মায়ের মমতা কাকে বলে ওদের দেখে শিখো
সন্তানেরই হাসির জন্য কলিজা দিচ্ছে ছিড়ে
আমায় যেন পাঠায় খোদা ঐ মায়েরই নিড়ে।

গালি

চিকিৎসককে ‘কষাই বলে’ গালি তুমি দাও
জীবণ মরণ সন্ধিক্ষণে তার কাছেই যাও
ড্রাইভারটা ‘পশুর মতো’ বলছো চালায় গাড়ি
পশুই কিন্তু পৌছে দিচ্ছে তোমায় আপন বাড়ি
উকিল দেখে বলছো তুমি ‘ব্যাটা মিথ্যাবাদী’
মিথ্যা নিয়ে মামলা করো হও বাদী-বিবাদী
শিক্ষক দেখে বলো তুমি ‘কোচিং ব্যবসা’ করে
নিজ সন্তানের জন্যই তাকে ডেকে নাওযে ঘরে
মোল্লা দেখে টিটকারি দাও ‘পরের বাড়ি খায়’
স্বজন মরলে জানাজা দিতে ঐ লোকটাই যায়
কৃষক দেখে দিচ্ছো গালি ‘ব্যাটা একটা চাষা’
তার সৃজিত সবজি খেয়ে বলো আচ্ছা-খাসা

যখন তখন যাকে তাকে উড়াও গালির ফানুস
চিন্তা করে দেখেছো কি তারাও কিন্তু মানুষ
কাজে কর্মে ভুল ত্রুটি সব মানুষেরই হয়
ঢালাও ভাবে দেখাও যদি গালি দেয়ার ভয়
তবে বলো কিভাবে কাজটা তারা করবে?
হাত কাপাবে, ভয়ে ভয়ে কাজ কিভাবে করবে?
অধম বলে, চিন্তা করো ‘তুমি কতটা ভালো’
ভয় দিওনা, সবার মনে জ্বালাও প্রেমের আলো।

আর কত?

আর কতটা লাশ পড়লে
কাতুকুত দেয়ার পরেও তোমার দাত বের হবে না?
আর কতজন পঙ্গু হলে
তোমার মনে হবে দেশে বিকলাঙ্গর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে?
আর কতটা জোড়ে চালালে
তোমার মনে হবে চালক বেপরোয়া গাড়ি চালাচ্ছে?
আর কতটা বলার পরে
তোমার মনে হবে এখন নির্লজ্জের মত চালকের পক্ষ নিচ্ছ?
আর কতটা প্রতিবাদ হলে
তোমার মনে হবে এবার পদত্যাগ করে কেটে পড়াই ভালো?
আর কতটি হাত কাটার পরে
তোমার মনে হবে চালকদের টুটি চেপে ধরার সময় এসেছে?
আর কতটা বুকে চাপ পড়লে
তোমার মনে হবে চাপটা যেন নিজেরই বুকে লাগলো?
আর কতটা নিচে নামার পরে
তোমার মনে হবে এখন অধমের মত কাজ করছো?
আর কতটা লজ্জা দেয়ার পর
তোমার মনে হবে তুমি বেহায়ার মত আচরণ করছো?
আর কত মানুষ মরলে
তোমার মনে হবে ছোট্ট দেশটির জন্য যথেষ্ট হয়েছে?
প্রশ্নগুলো সহজ, আর উত্তরটাও জানা
উত্তর দিতে বাধ্য নও, দিলেও নেই মানা।

স্বভাব

পেটাতে আমার ভালো লাগে
এটা পুরাতন স্বভাব
পেটাতে চাইলে বলুন বন্ধু
ইস্যুর কোন অভাব?

খেলার ছলে বিগরে গিয়ে
পিটিয়েছি সহপাঠি
গরু চড়াতে গিয়ে আমি
ভেঙ্গেছি কত লাঠি!

বিয়ে করে বউ পিটালাম
পিটালাম আপন জন
গ্রামে কত মেয়ে পিটালাম
দিতে চায়নিযে মন!

চাকরিতে এসে নেতা পিটালাম
পিটালাম কত আমলা
রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়েছে হুকুম
আন্দোলনটা সামলা!

বিরোধী নেতা, সাবেক মন্ত্রী
পিটাই ছাত্র জনতা
আমার পিঠে ভর করেইতে
টিকিয়ে রাখে ক্ষমতা!

পেটাতে আমার ভালো লাগে
এটা পুরাতন স্বভাব
পেটাতে চাইলে বলুন বন্ধু
ইস্যুর কোন অভাব?

টান

ভাঙ্গছে নড়িয়া-জাজিরা, টান পড়ে নাড়িতে
এখন কেবলই স্মৃতি, থাকতাম ঐ বাড়িতে।
খেলতাম ঐ মাঠে, চড়তাম ঐ গাছে
খেয়েছে পদ্মা, আজ স্মৃতিই শুধু আছে।
পড়তাম ঐ স্কুলে, মাদ্রাসায়, মক্তবে
বাপের ভিটা ছেড়ে যাওয়া শক্ত এই ভবে!
মসজিদে সালাত আদায়, মন্দিরে প্রার্থনা
দুষ্ট ছিলাম, বড়রা তাই ভাবতো যন্ত্রনা!
হাট-বাজার, চাষের জমি, বাগান-ভিটা যত
সব নিয়েছে পদ্মা কেড়ে, রেখে গেছে ক্ষত।
সব গেছে যে পদ্মার পেটে, রইলো না আর কিছু
বার বার নিলো সহায় কেড়ে, ছাড়ছে না যে পিছু।
প্রকৃতির নিয়মে চলে, ভাঙ্গা গড়ার খেলা
প্রতিরোধের কথা বলেই, কাটিয়ে দিলো বেলা!
নিঃস্ব হওয়ার পরে তোমরা, দেখতে আসো লীলা
নেতা নও, অভিনেতা তুমি, দেখছি তোমার খেলা।

বাণী!!!

নদীর পার ভাঙ্গার সাথে
কারো কপালও ভাঙ্গে
নদীর পার গড়ার সাথে
কারো কপালও গড়ে।

হৃদয় ভাঙ্গার সাথে
মানুষ হয় নিঃশেষ
এ হাত ছেড়ে ও হাত ধর
ভাবছো পেলে বেশ!

ভাঙ্গা-গড়া সবসময়ই
চলে জীবণ খেলায়
কষ্ট পাবে দেখে তুমি
ভাঙ্গে যদি শেষ বেলায়।

অধম জুয়েল বলে,
থাকতে সময় গুটালি হাত
সূর্য উঠবেই জানিস
পোহাইলে কালো রাত।

মানুষ হও

মানুষ রুপে জন্ম দিলে, দেখতে দিব্যি মানুষ
কথা কাজে মিল পাই না, শুধুই কথার ফানুষ।
মুখে সদা ধর্মের কথা, সুন্নত রাখে জিন্দা
কাজে দেখি ভিন্নতা, প্রতারণা চিন্তা।

পরের ধনে লোভ দেখি, দেখি করে ধান্দা
লুটে নেয় সবকিছু, বাছেনা লুলা-আন্ধা।
ভাব দেখায় এমন তিনি, ¯্রষ্টার সহি বান্দা
কাজের বেলায় দেখি তাকে, ভন্ড, চতুর, নাখান্দা।

অন্যের অনিষ্ট করে, ধণের বোঝা বৃদ্ধি করে
খাচ্ছো মানুষ ধরে ধরে, ভালো মানুষ সাজছো পরে।
জায়গা পাবে নর্দমাতে, হাটবে নিকষ কালো রাতে
থাকবে না কেউ তোমার সাথে, খাটলে শুধুই দিনে রাতে।
বিদায় ঘন্টা বাজবে যেদিন, কথাটা রেখো মনে
তোমায় আগলে রাখবে নাকো, তোমার জমা ধণে।

অধম জুয়ের বলে,
আলোর সঞ্চয় কর তুমি
থাকতে সময় হাতে
আলো তোমায় পথ দেখাবে
নিকষ কালো রাতে।

ইলিশের আকুতি

আমায় মেরে ভরছো সবাই, ডিপ ফ্রিজের ভিতর
ভাবতে পারো তোমরা হলে, কত বড় ইতর?
কয়েকটা দিন করলে দেরি, কি এমন ক্ষতি হতো
এই ক’দিনে ছাড়তাম ডিম, কোটি গুনন শত।
ডিম ফুঠে হতো পোনা, কয়েক দিনেই ঝাটকা
এর পরেই পারতে খেতে, ধরে আমায় টাটকা।
প্রজননের মৌসুম এখন, এলাম ডিম দিতে
নিষেধ থাকা সত্বেও জাল, ফেললে তুলে নিতে।
রাষ্ট্র তোমায় খাবার দিলো, আমায় না ধরতে
তুবুও আজ ডিমসহ কেন, হলো আমায় মরতে?
একটু যদি সবুর করতে, পুশিয়ে দিতাম ঘাটতি
জাল ভরে উঠতাম আমি, আমার আছে কাটতি!
তোমার এমন আচরনে, মন চায়না আসতে
মৌসুম এলে তবুও আমি, আসি ভাসতে ভাসতে।
প্রজনন আমার কমে গেলে, কমে উৎপাদন
তখন তুমি কেমনে চলো, ভাঙ্গে কেন মন?
রাজা, উজির, পাইক, পেয়াদা, রক্ষার তরে আছে
তবুও দেখি লোভনীয় আমি, এখনই তাদের কাছে।
সবাই যদি হও সচেতন, একটু আমার তরে
দেখবে আমি উঠবো বেড়ে, নদী যাবে ভরে।
এভাবে যদি ধরতে থাকো, একদিন হবো শেষ
তখন কেউ বলবে না আর, এটা ইলিশের দেশ।
অধম জুয়েল বলে, মা’ইলিশ করুক প্রজনন
অতি মুনাফা, স্বাদের লিপ্সা করো নিয়ন্ত্রন।

ভবনদী

পান করিও সব সময়
এক ঘাটেরই জল
থাকবে সুস্থ্য লাগবে ভালো
পাবে তাহার ফল।
ঘাটে ঘাটে ঘুরে যদি
বদলাও তুমি প্রেমো নদী
পাবে না জীবণ অবধি
প্রেমো সুধা জল।
পার হওয়া সহজ নয়গো
ওটা হলো ভবনদী
পাড়ি দিতে সহজ হবে
দিব্য জ্ঞান থাকে যদি।
এই নদীতে বান আসেরে
রক্ত ¯্রােত তখনই বয়
শক্ত হাতে ধরলে বৈঠা
তোমার নেইযে কোন ভয়।
সেই নদীটার বয়স হলে
পাড় শুকায়, শুকায় পানি
যৌবনেতেই নৌকা নিয়ে
করে সবে দাড় টানাটানি।

অধম জুয়েল বলে,
ভব নদীর পাড়ে এসে
ভক্তি নিয়ে আজলা ভরে
পানি কর পান, ভালোবেসে।
হলে লোভী কামী, বহুগামী
মানুষ কেউ বলবে না
তোমার সাথে কুকুরেরও
তুলনা কেউ করবে না।

ভাঙ্গন নিয়ে ভাঙ্গা পদ্য

১।
নদী খাচ্ছে ভূমি
খাচ্ছে দালান বাড়ি
বাপের ভিটা ছেড়ে দিলাম
নিরুদ্দেশে পাড়ি।

২।
নদীর ¯্রােতের সাথে
ভাঙ্গছে কপাল নেতার
কেউ ভাবছে এবারই
সুযোগ ভোটে জেতার।

৩।
ভাঙ্গন দেখতে প্রতিদিন
আসে হাজার লোক
কেউ দেখে রঙ্গ-তামাশা
কেউ জানায় শোক।

৪।
নেতা-মন্ত্রী, আমলা-ফইলা
এসে দেয় বিবৃতি
তাতে কি ভোলা যায়
ফেলে আসা স্মৃতি?

খন্ড খন্ড কথা

১।
আমি যখন হই কৃষ্ণ
তুমি হও রাধা
প্রয়োজন ফুরালেই বলো
এবার যা গাধা!
২।
আমি হই খাঁচা
তুমি হও পাখি
আমি চোখ বুজলেই
তুমি দাও ফাঁকি।
৩।
আমি হই পানি
তুমি ভাষাও নাও
প্রেম সাগরে পাল তুলে
ছেরে কোথায় যাও?
৪।
মন চায় ভালোবাসা
মুখ ফুটে চাই না
প্রয়োজনে চেয়ে নাও
আমায় কেন দাও না?
৫।
আমার কাছে তুই দামী
তোর কাছে আমি ফেলনা
আমার কাছে হীরা তুই
তোর কাছে আমি খেলনা।
৬।
এত ভালোবাসি
তুই চাসনা বুঝিতে
তুই চাইলে পাস
আমার জনম যায় খুজিতে।
৭।
আমার প্রম গভীর
তোর প্রেম হালকা
আমার প্রেম শক্ত
তোর প্রেম পলকা।
৮।
নিতে নিতে সব নিলি
দিলি না তুই কিছু
বেহায়া মনটা তবু
ঘোরে তোর পিছু!
৯।
আমার মনটা সরল
প্যাচ তোর মনে
শান্তিশ পেলাম না আমি
জীবনে তোর সনে।
১০।
হৃদয়টা ভাঙ্গে তবু
আছি গড়ার আশায়
একদিন বাড়াবি হাত
ডুবিনা হতাশায়।

কবির গায়ে জ্বর

কবির গায়ে জ্বর
কাপছে থর থর
কবি ভূগছে ঠান্ডায়
কাশে গন্ডায় গন্ডায়।

শরীরর তাপমাত্র
উঠছে মিটারের চাঙ্গে
এমন ব্যাথা, মনে হয়
পিঠে চাহা ভাঙ্গে।

জ্বরে খায় না
খায় নাকি কাপানিতে
এইবার বুঝছি মানুষ
কেমনে মরে হাপানিতে!

জ্বর আসে জ্বর যায়
থাকে রোগা দেহ
জ্বর নিয়ে ফাজলামো
করিওনা কেহ!

বৃষ্টি

সমান্তরাল গতিতে ঝরছে বৃষ্টি!
অজানা ভালোলাগা মধুর ঝির ঝির শব্দে!
ঝরুক সারারাত, রাস্তায় সারা মাসই পানি থাকে
আরেকটু বাড়লে এমন কি ক্ষতি হবে বলো?
সাগরে করি যে বাস, শিশিরে ভয় করি নাকো!
আমাদের বাড়ি যে পালংয়ের বিছানা কান্দি!

বিলাসের কারনে নয়, পৈত্রিক আবাস টিনের
চালের উপর বৃষ্টির যে গান, পাগল করা সুরে
পাতলা কাথা জড়িয়ে নিরবে উপভোগ করি
বৃষ্টির মধুর সুরেলা সঙ্গীত, রিম ঝিম বাজনা
আমায় মোহিত করে, অন্যন্য আবেশে জড়ায়
আমি ধন্য হই, মুগ্ধ হই, ¯িœদ্ধ হই, শিক্ত হই।

বৃষ্টি আমায় ভেজায়, যতটা না ভিজি
চোখের জলে, হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণে
আমার হৃদয় যখন বিদীর্ণ করে যায়
তোমার ছোড়া লক্ষভ্রষ্ট বিষাক্ত তীর
চৌচির হয় হৃদয় চৈত্রের দাবদাহে যেমন
মাটি ফেটে হয় পাথর, তখন এক পশলা বৃষ্টি
আমায় কোমল আবেশে জড়িয়ে শুনায়
ভালোবাসার গান, ছোয়ায় কাশফুলের পরশ
আমি যে গ্রামের ছেলে, বৃষ্টি, কাদা, জল
আমায় নোংরা করেনা, শুদ্ধ করে, করে পবিত্র
আমি যে গ্রামের ছেলে, গ্রামেই বসবাস।

বৃথা চেষ্টা

যার কারনে আসলাম আমি রঙ্গীন ধরণীতে
বৃথা চেষ্টা করি আমি তাহার ঋণ শোধিতে।

ভালবেসে কষ্ট শুষে দিলো আমায় জন্ম
তার দয়াতে দুনিয়াতে করছি কত কর্ম
তার আদরে তার যতনে উঠলাম আমি বেড়ে
সেই মাকে খোদা তুমি নিলা কেন কেড়ে
মায়ের অভাব ভুলতে চেয়ে পারি নাযে ভুলতে
শক্তি আমায় দাও বিধাতা এই শোকের ভার তুলতে।

মায়ের মত হয়না যে কেউ এই ধরনীতে
বৃথা চেষ্টা করি আমি তাহার ঋণ শোধিতে।

মাযে আমার শত কষ্টেও দোয়া গেল দিয়ে
সেই মাকে খোদা তুমি কেন গেলে নিয়ে
মাযে আমার চন্দ্র সূর্য আকাশ বাতাশ তারা
দুনিয়াটা বৃথা লাগে মাগো তোমায় ছাড়া
তোমার হাতের পরশ আমি ভুলতে যে পারিনা
মাগো আমি তোমায় ছাড়া কিছুই যে বুঝিনা।

মাগো তুমি খোদার নিয়ামত পারিনি বুঝিতে
বৃথা চেষ্টা করি আমি তাহার ঋণ শোধিতে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here