বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৮
( ২০১৮ সনের ১৫ নং আইন )
[০৭ মার্চ, ২০১৮]
Bangladesh Rural Development Board Ordinance, 1982 রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক সময়োপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের‌ মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানর চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হয় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং

যেহেতু ২০১৩ সনের ৭নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং

যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং

যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে, Bangladesh Rural Development Board Ordinance, 1982 রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক সময়োপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

সূচী
ধারাসমূহ
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
২। সংজ্ঞা
৩। বোর্ড প্রতিষ্ঠা
৪। প্রধান কার্যালয়
৫। বোর্ডের গঠন, ইত্যাদি
৬। বোর্ডের সভা
৭। বোর্ডের কার্যাবলি
৮। মহাপরিচালক, ইত্যাদি
৯। তহবিল
১০। তহবিলের অর্থের উৎস, ইত্যাদি
১১। ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
১২। বাজেট
১৩। হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৪। প্রশাসনিক স্তর
১৫। বোর্ডের কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি
১৬। বার্ষিক প্রতিবেদন
১৭। ক্ষমতা অর্পণ
১৮। জনসেবক
১৯। নির্দেশদানে সরকারের সাধারণ ক্ষমতা
২০। অসুবিধা দূরীকরণ
২১। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২২। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২৩। রহিতকরণ ও হেফাজত
Copyright © 2010, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs

 

 

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৮
( ২০১৮ সনের ১৫ নং আইন )
[০৭ মার্চ, ২০১৮]
     
Bangladesh Rural Development Board Ordinance, 1982 রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক সময়োপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের‌ মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানর চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হয় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং

যেহেতু ২০১৩ সনের ৭নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং

যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং

যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে, Bangladesh Rural Development Board Ordinance, 1982 রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক সময়োপযোগী করিয়া পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে এই আইনে-

(১) ‘‘উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি’’ অর্থ সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১০ এর অধীন নিবন্ধিত উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (টিসিসিএ);

(২) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;

(৩) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ৯ এ উল্লিখিত তহবিল;

(৪) ‘‘পল্লী উন্নয়ন দল’’ অর্থ মহাপরিচালক বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কর্তৃক স্বীকৃত আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে বসবাসকারী একই পেশা বা একই আর্থ-সামাজিক অবস্থাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী কর্তৃক গঠিত কোন দল;

(৫) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(৬) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(৭) ‘‘বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড;

(৮) ‘‘ভাইস চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান;

(৯) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ ধারা ৮ এর অধীন নিযুক্ত বোর্ডের মহাপরিচালক এবং মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনরত ব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১০) ‘‘সদস্য’’ অর্থ বোর্ডের কোনো সদস্য;

(১১) ‘‘সমবায় সমিতি’’ অর্থ সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ (২০০১ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (২০) এ সংজ্ঞায়িত কোনো সমবায় সমিতি।

বোর্ড প্রতিষ্ঠা
৩। (১) Bangladesh Rural Development Board Ordinance, 1982 (Ordinance No. LIII of 1982) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (Bangladesh Rural Development Board) এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত।

(২) বোর্ড একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধির বিধান সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার এবং হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং বোর্ড উহার নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

প্রধান কার্যালয়
৪। (১) বোর্ডের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।

(২) বোর্ড, প্রয়োজন মনে করিলে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

বোর্ডের গঠন, ইত্যাদি
৫। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হইবে, যথা : –

(ক) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;

(খ) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী, যদি থাকেন, ভাইস- চেয়ারম্যানও হইবেন;

(গ) সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পদাধিকারবলে;

(ঘ) পল্লী উন্নয়ন বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশন এর সদস্য, পদাধিকারবলে;

(ঙ) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, কুমিল্লা, পদাধিকারবলে;

(চ) মহাপরিচালক, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া, পদাধিকারবলে;

(ছ) মহাপরিচালক, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, পদাধিকারবলে;

(জ) নিবন্ধক ও মহাপরিচালক, সমবায় অধিদপ্তর, পদাধিকারবলে;

(ঝ) কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন প্রতিনিধি;

(ঞ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উক্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন প্রতিনিধি;

(ট) অর্থ বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন প্রতিনিধি;

(ঠ) স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উক্ত বিভাগের যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন প্রতিনিধি;

(ড) উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির জাতীয় ফেডারেশন এর চেয়ারম্যান, পদাধিকারবলে;

(ঢ) উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতিকে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী প্রধান প্রতিষ্ঠানসমূহ হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন সদস্য;

(ণ) মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পদাধিকারবলে, যিনি উহার সদস্য-সচিবও হইবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী, যদি থাকেন, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী উভয়ের অনুপস্থিতিতে উপ-মন্ত্রী, যদি থাকেন, এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী সকলের অনুপস্থিতিতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঢ) এর অধীন মনোনীত সদস্য-

(ক) তাহার মনোনয়নের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদে স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন;

(খ) সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, প্রয়োজনবোধে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে, যে কোনো সময় কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে উক্ত সদস্যের মনোনয়ন বাতিল করিতে পারিবে।

বোর্ডের সভা
৬। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) বোর্ডের সভা চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, উহার সদস্য-সচিব কর্তৃক আহুত হইবে এবং উহা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে।

(৩) প্রতি ৬ (ছয়) মাসে বোর্ডের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হইবে।

(৪) বোর্ডের সভার কোরামের জন্য মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মুলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

(৫) বোর্ডের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির একটি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

(৬) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং ধারা ৫ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) ও (খ) এর বিধান সাপেক্ষে, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে ভাইস-চেয়ারম্যান এবং চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান উভয়ের অনুপস্থিতিতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করিবেন।

(৭) কোনো সদস্য পদের শূন্যতা বা বোর্ড গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না বা তৎসম্পর্কে কোনো আদালতে বা অন্য কোথাও কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না

বোর্ডের কার্যাবলি
৭। (১) বোর্ডের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

(ক) উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং পল্লী উন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রাম পর্যায়ে প্রাথমিক সমবায় সমিতি, পল্লী উন্নয়ন দল এবং উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতিকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্ব-শাসিত ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই চালিকা-শক্তিরূপে গড়িয়া উঠিতে সহায়তা করা;

(খ) পল্লীর দরিদ্র মানুষের আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের জন্য প্রাথমিক সমবায় সমিতি ও পল্লী উন্নয়ন দলকে উৎসাহিত করা;

(গ) সমবায়ের উন্নতির উপায় হিসাবে নিবিড় কৃষি সেচের উন্নয়ন এবং সমবায় সমিতি বা পল্লী উন্নয়ন দল গঠনের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ ও ভূ-পৃষ্ঠের পানির উপর নির্ভর করিয়া সেচ সুবিধাদির সর্বাধিক ব্যবহার করা;

(ঘ) সমবায় সমিতি, উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি এবং পল্লী উন্নয়ন দলের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের ব্যবস্থা করিয়া উহার উৎপাদনমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ উক্ত সমিতি বা দলের সদস্যদের শেয়ার ও সঞ্চয়ের জমার পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করা;

(ঙ) আর্থিকভাবে সক্ষম উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি এবং পল্লী উন্নয়ন দলের সদস্যদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণে, বিশেষত, কৃষিতে ব্যবহৃত ও কৃষিজাত পণ্য বাজারজাতকরণে উৎসাহ প্রদান করা;

(চ) পল্লী উন্নয়ন দল এবং উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং আদর্শ কৃষকদেরকে কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন কার্যক্রমে ফলপ্রসূ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;

(ছ) পল্লী উন্নয়ন দল এবং উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতিকে সেবা, সরবরাহ ও সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সংস্থাসমূহের সহিত যোগাযোগ ও সমন্বয় রক্ষা করা;

(জ) পল্লী উন্নয়ন সম্পর্কিত উন্নয়ন, উদ্বুদ্ধকরণ এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমসমূহ প্রগতিশীলভাবে পরিচালনার জন্য উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির জেলা ও জাতীয় ফেডারেশনসমূহকে উৎসাহ প্রদান করা;

(ঝ) বোর্ডের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনে থানা, উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ের কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা;

(ঞ) বোর্ডের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রস্তুত করা;

(ট) বার্ষিক বাজেট প্রস্তুত করা বা ক্ষেত্রমত, ধারা ১২ এর বিধান অনুসারে অনুমোদন করা;

(ঠ) পল্লী উন্নয়নের সহিত সংগতিপূর্ণ প্রকল্প, কর্মসূচি ও পল্লী উন্নয়ন মডেল সরকারের নিকট উপস্থাপন করা এবং সরকারের অনুমোদনক্রমে উহা বাস্তবায়ন করা;

(ড) বোর্ড কর্তৃক গৃহীত প্রকল্প ও কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও উহা হইতে উদ্ভূত সমস্যা সম্পর্কে, এবং উক্ত প্রকল্প ও কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জিত হইতেছে কিনা তৎসম্পর্কে সমীক্ষা বা যাচাই ও মূল্যায়নের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন মূল্যায়ন এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োজিত করা; এবং

(ঢ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, প্রয়োজনীয় ও আনুষঙ্গিক কার্য সম্পাদন করা।

(২) উপ-ধারা (১) এর বিধানাবলীর সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ণ না করিয়া বোর্ড উহার কার্যাবলী সম্পাদন করিবার জন্য-

(ক) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বাজেট বরাদ্দের বা কোনো বিশেষ তহবিল বরাদ্দের মধ্যে কোনো কার্য সম্পাদন করিতে, কোনো ব্যয় নির্বাহ করিতে, বোর্ডের ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য, সেবা বা যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করিতে এবং প্রয়োজনীয় সমঝোতা বা চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে;

(খ) কোনো পরিকল্পনা বা স্কীম প্রস্তুত বা গ্রহণের উদ্দেশ্যে সরকার, কোনো সংস্থা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা কোনো এজেন্সী বা সরকারের অনুমতিক্রমে কোনো বিদেশি সরকার বা সংস্থার নিকট হইতে পরামর্শ বা সহায়তা গ্রহণ করিতে পারিবে;

(গ) পল্লী উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক প্রণীত নীতিমালার বাস্তবায়ন ও এতদ্‌সংক্রান্ত কার্যাবলির সমন্বয় সাধন করিতে পারিবে।

মহাপরিচালক, ইত্যাদি
৮। (১) বোর্ডের একজন মহাপরিচালক থাকিবেন।

(২) সরকার উপযুক্ত একজন কর্মচারীকে মহাপরিচালক হিসাবে নিয়োগ করিবে এবং তাহার চাকরির মেয়াদ ও শর্তাবলি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।

(৩) মহাপরিচালক বোর্ডের সার্বক্ষণিক মুখ্য নির্বাহী হইবেন এবং তিনি―

(ক) বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য বোর্ডের নিকট দায়ী থাকিবেন;

(খ) বোর্ডের নির্দেশ মোতাবেক বোর্ডের অন্যান্য কার্যসম্পাদন করিবেন।

(৪) সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচালক নিয়োগ করিতে পারিবে এবং তাহাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্তাবলি সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হইবে।

তহবিল
৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ডের নিম্নবর্ণিত ৩ (তিন) প্রকারের তহবিল থাকিবে যথা :―

(ক) পল্লী উন্নয়ন তহবিল;

(খ) প্রকল্প ব্যবস্থাপনা তহবিল; এবং

(গ) বোর্ড পরিচালনা তহবিল।

(২) গ্রাম পর্যায়ে গঠিত প্রাথমিক সমবায় সমিতি, পল্লী উন্নয়ন দল এবং উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির উন্নয়ন, উদ্বুদ্ধকরণ এবং বিকাশমূলক কর্মসূচি পরিচালনায় পল্লী উন্নয়ন তহবিল ব্যবহৃত হইবে।

(৩) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিশেষ কার্যক্রম সম্পাদন বা সরকার ও বোর্ডের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা তহবিল ব্যবহৃত হইবে।

(৪) মহাপরিচালক, পরিচালক এবং বোর্ডের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য সকল পরিচালনামূলক ও আনুষঙ্গিক ব্যয়ভার বহনের জন্য বোর্ড পরিচালনা তহবিল ব্যবহৃত হইবে।

তহবিলের অর্থের উৎস, ইত্যাদি
১০। (১) পল্লী উন্নয়ন তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা :-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান বা বরাদ্দকৃত বাজেট;

(খ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা সমবায়ী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(গ) বোর্ডের স্থাপনাসমূহ হইতে প্রাপ্ত আয়;

(ঘ) বোর্ডের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়লব্ধ আয়;

(ঙ) বোর্ডের অর্থ বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত আয়; এবং

(চ) অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

(২) প্রকল্প ব্যবস্থাপনা তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা :-

(ক) সরকার বা কোনো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো উন্নয়ন বা কারিগরি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিপরীতে প্রাপ্ত অর্থ; এবং

(খ) সরকারের অনুমোদনক্রমে, দেশি ও বিদেশি সংস্থা হইতে প্রাপ্ত অনুদান।

(৩) বোর্ড পরিচালনা তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে, যথা : ―

(ক) সরকারি অনুদান বা সরকারের অনুমোদিত সংস্থাসমূহ হইতে প্রাপ্ত অনুদান; এবং

(খ) অন্য কোনো উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

(৪) বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত কোনো প্রকল্প বা কর্মসূচি সমাপ্তির পর প্রকল্প দলিলের পর শর্ত অনুযায়ী উক্ত প্রকল্প বা কর্মসূচির সকল সম্পদ বোর্ডের সম্পদ হইবে এবং উক্ত প্রকল্প বা কর্মসূচির সকল অর্থ ধারা ৯ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এ বর্ণিত পল্লী উন্নয়ন তহবিলে জমা হইবে।

(৫) তহবিলের অর্থ বোর্ডের অনুমোদনক্রমে কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে।

ব্যাখ্যা।―‘‘তপশিলি ব্যাংক’’ অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (P.O. No. 127 of 1972) এর Article 2(j) তে সংজ্ঞায়িত “Scheduled Bank”।

ঋণ গ্রহণের ক্ষমতা
১১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বোর্ড, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
বাজেট
১২। বোর্ড প্রতি বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য আয়-ব্যয়সহ পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট অনুমোদনের জন্য পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে সম্ভাব্য কি পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন হইবে উহারও উল্লেখ থাকিবে।
হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৩। (১) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে বোর্ড অর্থ ব্যয়ের যথাযথ হিসাব রক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর এই ধারায় মহা হিসাব-নিরীক্ষক হিসাবে অভিহিত, প্রতি বৎসর বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন।

(৩) মহা হিসাব-নিরীক্ষক নিরীক্ষিত প্রতিবেদন বোর্ডে প্রেরণ করিবেন এবং বোর্ড উক্ত প্রতিবেদনে বোর্ডের মন্তব্য প্রদানপূর্বক উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে।

(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা ছাড়াও, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার জন্য বোর্ড কর্তৃক গঠিত একটি নিরীক্ষা ইউনিট দ্বারা বোর্ডের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে।

(৫) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব নিরীক্ষার প্রয়োজনে মহা হিসাব-নিরীক্ষক বা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি বোর্ডের যে কোনো রেকর্ড, নথি, বই, দলিল, নগদ জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যান্য সম্পত্তি পরীক্ষা করিতে পারিবেন।

(৬) নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লিখিত ত্রুটি বা অনিয়মসমূহ সমাধানের জন্য বোর্ড প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।

প্রশাসনিক স্তর
১৪। (১) বোর্ড নিম্নবর্ণিত ৪(চার) টি প্রশাসনিক স্তরে উহার কার্য-সম্পাদন করিবে, যথা :-

(ক) জাতীয় স্তর;

(খ) বিভাগীয় স্তর;

(গ) জেলা স্তর; এবং

(ঘ) উপজেলা বা থানা স্তর।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বোর্ড, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, প্রশাসনিক স্তরের সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি করিতে পারিবে।

(৩) বোর্ডের প্রত্যেক প্রশাসনিক স্তরের কর্মচারীগণের সংখ্যা এবং কার্যাবলি সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বোর্ড নির্ধারণ করিবে।

বোর্ডের কর্মচারী নিয়োগ, ইত্যাদি
১৫। (১) বোর্ড উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।

(২) বোর্ডের কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বার্ষিক প্রতিবেদন
১৬। (১) বোর্ড প্রতি অর্থ বৎসরে উহার সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী অর্থ বৎসরের প্রথম ৩(তিন) মাসের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করিবে।

(২) সরকার, প্রয়োজনে, বোর্ডের নিকট হইতে যে কোনো সময় নিম্নবর্ণিত সকল বা কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন আহবান বা কাগজ তলব করিতে পারিবে এবং বোর্ড উহা সরকারের নিকট দাখিল করিবে, যথা :-

(ক) রিটার্ন, হিসাব, বিবৃতি, প্রাক্কলন এবং পরিসংখ্যান;

(খ) প্রশ্ন সম্পর্কিত তথ্য ও মন্তব্য; এবং

(গ) কোনো কাগজপত্র বা দলিলাদির অনুলিপি।

ক্ষমতা অর্পণ
১৭। (১) বোর্ড, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, তদ্‌কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাধীনে, মহাপরিচালক, পরিচালক বা বোর্ডের যে কোনো কর্মচারীকে উহার যে কোনো ক্ষমতা অর্পণ করিতে পারিবে।
জনসেবক
১৮। বোর্ডের কর্মচারীগণ তাহাদের দায়িত্ব পালনকালে Penal Code, 1860 (XLV of 1860) এর Section 21 এ Public Servant (জনসেবক) অভিব্যক্তিটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক বলিয়া গণ্য হইবেন।
নির্দেশদানে সরকারের সাধারণ ক্ষমতা
১৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সময় সময়, পল্লী উন্নয়নের জন্য যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা সমীচীন মনে করিবে সেই সকল পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বোর্ডকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে, এবং উক্তরূপে কোনো নির্দেশ প্রদান করা হইলে বোর্ড উহা প্রতিপালন করিবে।
অসুবিধা দূরীকরণ
২০। এই আইনের কোনো বিধানে অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার, এই আইনের অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২১। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
২২। (১) বোর্ড, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন ও বিধির সহিত অসামঞ্জ্যপূর্ণ নহে এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পরিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
২৩। (১) Bangladesh Rural Development Board Ordinance, 1982 (Ordinance No. LIII of 1982), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত Ordinance এর অধীন-

(ক) কৃত কোনো কার্য বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(খ) Board কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোনো মামলা বা গৃহীত কার্যধারা বা সূচিত যে কোনো কার্যক্রম অনিষ্পন্ন থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উহা এই আইনের অধীন দায়েরকৃত, গৃহীত বা সূচিত হইয়াছে;

(গ) Board কর্তৃক সম্পাদিত কোনো চুক্তি, দলিল বা ইনস্ট্রুমেন্ট এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন সম্পাদিত হইয়াছে;

(ঘ) Board এর সকল ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা এই আইনের বিধান অনুযায়ী সেই একই শর্তে বোর্ডের ঋণ, দায় ও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসাবে গণ্য হইবে;

(ঙ) কোনো চুক্তি বা চাকরির শর্তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে Board এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, উক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তে বোর্ডের চাকরিতে নিয়োজিত এবং, ক্ষেত্রমত, বহাল থাকিবেন; এবং

চ) Board এর সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সুবিধা, তহবিল, স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি, নগদ অর্থ, ব্যাংক জমা ও সিকিউরিটিসহ তহবিল এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট সকল হিসাব, বই, রেজিস্টার, রেকর্ডপত্রসহ অন্যান্য সকল দলিল-দস্তাবেজ এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বোর্ড হস্তান্তরিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) উক্ত Ordinance এর অধীন প্রণীত কোনো বিধি বা প্রবিধান, জারিকৃত কোনো প্রজ্ঞাপন, প্রদত্ত কোনো আদেশ, নির্দেশ, অনুমোদন, সুপারিশ, প্রণীত সকল পরিকল্পনা বা কার্যক্রম এবং অনুমোদিত সকল বাজেট উক্তরূপ রহিতের অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ থাকিলে, এই আইনের কোনো বিধানের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, এই আইনের অনুরূপ বিধানের অধীন প্রণীত, জারিকৃত, প্রদত্ত এবং অনুমোদিত বলিয়া গণ্য হইবে, এবং মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা এই আইনের অধীন রহিত বা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, বলবৎ থাকিবে।

Copyright © 2010, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here