বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮
( ২০১৮ সনের ১৭ নং আইন )
[১৯ এপ্রিল, ২০১৮]
Buddhist Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং

যেহেতু ২০১৩ সনের ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং

যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং

যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Buddhist Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXIX of 1983) রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সূচী
ধারাসমূহ
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
২। সংজ্ঞা
৩। ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা
৪। ট্রাস্টের কার্যালয়
৫। ট্রাস্টি বোর্ড গঠন
৬। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
৭। ট্রাস্টি বোর্ড সভা
৮। ট্রাস্টের কার্যাবলি
৯। পরিচালনা ও প্রশাসন
১০। সচিব
১১। কর্মচারী নিয়োগ
১২। ট্রাস্টের তহবিল
১৩। বাজেট
১৪। হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৫। ক্ষমতা অর্পণ
১৬। প্রতিবেদন
১৭। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১৮। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
১৯। রহিতকরণ ও হেফাজত
Copyright © 2010, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs

 

 

বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮
( ২০১৮ সনের ১৭ নং আইন )
[১৯ এপ্রিল, ২০১৮]
     
Buddhist Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক পুনঃপ্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন
যেহেতু সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন) আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ১৪ নং আইন) দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হইতে ১৯৮৬ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সামরিক ফরমান দ্বারা জারিকৃত অধ্যাদেশসমূহের অনুমোদন ও সমর্থন সংক্রান্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের চতুর্থ তপশিলের ১৯ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় এবং সিভিল আপিল নং ৪৮/২০১১ তে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়ে সামরিক আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণাপূর্বক উহার বৈধতা প্রদানকারী সংবিধান (সপ্তম সংশোধন) আইন, ১৯৮৬ (১৯৮৬ সনের ১ নং আইন) বাতিল ঘোষিত হওয়ায় উক্ত অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা লোপ পায়; এবং

যেহেতু ২০১৩ সনের ৭ নং আইন দ্বারা উক্ত অধ্যাদেশসমূহের মধ্যে কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকর রাখা হয়; এবং

যেহেতু উক্ত অধ্যাদেশসমূহের আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করিয়া আবশ্যক বিবেচিত অধ্যাদেশসমূহ সকল স্টেক-হোল্ডার ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নূতন আইন প্রণয়ন করিবার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে; এবং

যেহেতু সরকারের উপরি-বর্ণিত সিদ্ধান্তের আলোকে Buddhist Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXIX of 1983) রহিতক্রমে উহা পরিমার্জনপূর্বক পুনঃপ্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন
১। (১) এই আইন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) ‘‘চেয়ারম্যান’’ অর্থ বোর্ডের চেয়ারম্যান;

(২) ‘‘ট্রাস্ট’’ অর্থ ধারা ৩ এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট;

(৩) ‘‘ট্রাস্টি’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের কোনো সদস্য;

(৪) ‘‘ট্রাস্টি বোর্ড’’ অর্থ ধারা ৫ এর অধীন গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড;

(৫) ‘‘তহবিল’’ অর্থ ধারা ১২ এ উল্লিখিত বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিল;

(৬) ‘‘প্রবিধান’’ অর্থ ধারা ১৮ এর অধীন প্রণীত প্রবিধান;

(৭) ‘‘বিধি’’ অর্থ ধারা ১৭ এর অধীন প্রণীত বিধি;

(৮) ‘‘ভাইস চেয়ারম্যান’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান;

(৯) ‘‘সচিব’’ অর্থ ধারা ১০ এর অধীন নিযুক্ত ট্রাস্টের সচিব; এবং

(১০) ‘‘সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান’’ অর্থ ট্রাস্টি বোর্ডের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান।

ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা
৩। (১) Buddhist Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXIX of 1983) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Buddhist Religious Welfare Trust এমনভাবে বহাল থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে।

(২) ট্রাস্ট একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সিলমোহর থাকিবে এবং উহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং উহা নিজ নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে উহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

ট্রাস্টের কার্যালয়
৪। (১) ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে।

(২) ট্রাস্টি বোর্ড, প্রয়োজনবোধে, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

ট্রাস্টি বোর্ড গঠন
৫। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্যগণের সমন্বয়ে ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হইবে, যথাঃ-

(ক) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;

(খ) জাতীয় সংসদের স্পীকার কর্তৃক মনোনীত ০২ (দুই) জন সংসদ-সদস্য, যাহারা সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানও হইবেন।

(গ) সচিব, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়; এবং

(ঘ) বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের মধ্য হইতে সরকার কর্তৃক মনোনীত ০৮ (আট) জন ট্রাস্টি।

(২) সচিব, ট্রাস্টি বোর্ডের সাচিবিক দায়িত্ব পালন করিবেন।

(৩) সরকার উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন মনোনীত ট্রাস্টিগণের মধ্য হইতে ১(এক) জনকে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসাবে মনোনীত করিবে।

(৪) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন মনোনীত ট্রাস্টিগণ তাহাদের মনোনয়নের তারিখ হইতে ৩ (তিন) বৎসর মেয়াদে ট্রাস্টি হিসাবে বহাল থাকিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে সরকার কোনে মনোনীত ট্রাস্টিকে কোনোরুপ কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাহার দায়িত্ব হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ) এর অধীন মনোনীত কোনো ট্রাস্টি যে কোনো সময় চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে ট্রাস্টির দায়িত্ব পরিত্যাগ করিতে পারিবেন।

(৬) ট্রাস্টি পদে কেবল শূন্যতা বা ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে ত্রুটি থকিবার কারণে ট্রাস্টি বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তৎসম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।

ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
৬। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হইবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় কল্যাণসহ সার্বিক কল্যাণ সাধন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ সহাবস্থান এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে কার্য পরিচালনা করা।
ট্রাস্টি বোর্ড সভা
৭। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে ট্রাস্টি বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) ট্রাস্টি বোর্ডের সভা চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময়, তারিখ ও স্থানে সচিব কর্তৃক আহুত হইবে।

(৩) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে তাহার অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয় ক্রমানুসারে এবং তাদের অনুপস্থিতিতে ভাইস-চেয়ারম্যান এবং উভয়ের অনুপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ট্রাস্টি সভাপতিত্ব করিবেন।

(৪) অন্যূন ৪ (চার) জন সদস্যের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হইবে।

(৫) বোর্ডের সভায় প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে, তবে ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।

ট্রাস্টের কার্যাবলি
৮। ট্রাস্টের কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা :-

(ক) বৌদ্ধ ধর্মীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারসহ বাংলাদেশে বসবাসরত সকল ধর্মাবলম্বীর মধ্যে সৌহার্দ ও সম্প্রীতিবোধ দৃঢ়করণের লক্ষ্যে সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালনা;

(খ) বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা, সংস্কার, সংরক্ষণ, উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান;

(গ) প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মীয় পুরাকীর্তি, ঐতিহ্যসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং উহাদের সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য সহায়তা প্রদান;

(ঘ) বৌদ্ধ ধর্ম, দর্শন, কৃষ্টি ও প্রাচীন ঐতিহ্য বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা;

(ঙ) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, জেলাভিত্তিক মডেল লাইব্রেরি ও তথ্যভান্ডার স্থাপন এবং উহাদের উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্য সহায়তা প্রদান;

(চ) বৌদ্ধ ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহের পবিত্রতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ;

(ছ) বৌদ্ধ ভিক্ষু, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও বৌদ্ধ জনগণকে প্রশিক্ষণ প্রদান;

(জ) বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং অসহায় বৌদ্ধ গৃহীদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান;

(ঝ) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক যোগাযোগ উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ;

(ঞ) বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থাদির অনুবাদ, প্রকাশ ও প্রচারকরণ; এবং

(ট) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যাবলি সম্পাদন।

পরিচালনা ও প্রশাসন
৯। ট্রাস্টের পরিচালনা ও প্রশাসন ট্রাস্টি বোর্ডের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং ট্রাস্ট যে সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য-সম্পাদন করিতে পারিবে ট্রাস্টি বোর্ডও সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্য-সম্পাদন করিতে পারিবে।
সচিব
১০। (১) ট্রাস্টের ১ (এক) জন সচিব থাকিবেন, যিনি উহার প্রধান নির্বাহী হইবেন।

(২) সচিব নির্ধারিত শর্তে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্য হইতে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হইবেন।

(৩) সচিব প্রধান নির্বাহী হিসাবে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও কার্য-সম্পাদন করিবেন এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকিবেন।

(৪) সচিবের পদ শূন্য হইলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে সচিব তাহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে শূন্য পদে নবনিযুক্ত সচিব কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা সচিব পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক মনোনীত কোনো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী উপযুক্ত ব্যক্তি নির্ধারিত শর্তে সচিবের দায়িত্ব পালন করিবেন।

কর্মচারী নিয়োগ
১১। (১) ট্রাস্ট উহার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সরকার কর্তৃক অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।

(২) ট্রাস্টের কর্মচারীদের নিয়োগ পদ্ধতি এবং চাকরির শর্তাবলি প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

ট্রাস্টের তহবিল
১২। (১) বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিল নামে ট্রাস্টের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথাঃ-

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(খ) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(গ) সরকার অনুমোদিত দেশি বা বিদেশি উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ;

(ঘ) তহবিলের বিনিয়োগ হইতে আহরিত অর্থ;

(ঙ) ট্রাস্টের নিজস্ব উৎস হইতে প্রাপ্ত আয়; এবং

(চ) ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোনো উৎস হইতে অনুমোদিত অর্থ।

(২) তহবিলের অর্থ ট্রাস্টের নামে ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো তপশিলি ব্যাংকে জমা রাখিতে হইবে এবং উক্তরূপ অর্থ হইতে ট্রাস্টের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় নির্বাহ করা যাইবে।

ব্যাখ্যা।- এই ধারায় উল্লিখিত ‘তপশিলি ব্যাংক’ অর্থে Bangladesh Bank Order, 1972(P.O.127 of 1972) এর Article2(j) তে সংজ্ঞায়িত Scheduled Bank কে বুঝাইবে।

(৩) তহবিলের ব্যাংক হিসাব ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পদ্ধতিতে এবং ট্রাস্ট বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ১ (এক) জন ট্রাস্টি এবং সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত হইবে।

বাজেট
১৩। ট্রাস্ট প্রত্যেক বৎসর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের মধ্যে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে সরকারের নিকট হইতে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।
হিসাব রক্ষণ ও নিরীক্ষা
১৪। (১) ট্রাস্ট উহার আয়-ব্যয়ের হিসাব যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করিবে।

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অতঃপর মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বলিয়া উল্লিখিত, প্রত্যেক বৎসর ট্রাস্টের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের একটি করিয়া অনুলিপি সরকার ও ট্রাস্টি বোর্ডের নিকট পেশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কিংবা তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি ট্রাস্টের সকল রেকর্ড, দলিল-দস্তাবেজ, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভাণ্ডার এবং অন্যধিক সম্পত্তি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, সচিব ও ট্রাস্টের অন্যান্য কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবেন।

(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন হিসাব-নিরীক্ষা ছাড়াও Bangladesh Chartered Accountants Order, 1973 (P.O No. 2 of 1973) এর Article 2(1)(b) তে সংজ্ঞায়িত চার্টার্ড একাউনটেন্ট দ্বারা ট্রাস্টের হিসাব নিরীক্ষা করা যাইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে এক বা একাধিক চার্টার্ড একাউনটেন্ট নিয়োগ করিতে পারিবে।

ক্ষমতা অর্পণ
১৫। ট্রাস্টি বোর্ড, উহার যে কোনো ক্ষমতা সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে চেয়ারম্যান, সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, ট্রাস্টি, সচিব বা অন্য কোনো কর্মচারীকে অর্পণ করিতে পারিবে।
প্রতিবেদন
১৬। (১) প্রত্যেক অর্থ বৎসর শেষ হইবার পর ট্রাস্টি বোর্ড উক্ত অর্থ বৎসরের সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ সংবলিত একটি বার্ষিক প্রতিবেদন পরবর্তী বৎসরের ৩০ জুনের মধ্যে সরকারের নিকট পেশ করিবে।

(২) সরকার, প্রয়োজনে, ট্রাস্টের নিকট হইতে উহার যে কোনো বিষয়ের উপর প্রতিবেদন এবং বিবরণী অথবা অন্য কোনো তথ্য চাহিতে পারিবে এবং ট্রাস্ট উহা সরবরাহ করিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
১৭। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা
১৮। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ট্রাস্টি বোর্ড সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।
রহিতকরণ ও হেফাজত
১৯। (১) এই আইন কার্যকর হইবার সঙ্গে সঙ্গে Buddhist Religious Welfare Trust Ordinance, 1983 (Ordinance No. LXIX of 1983), অতঃপর উক্ত Ordinance বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিত হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত Ordinance এর অধীন, –

(ক) কৃত সকল কার্যক্রম ও গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত ও গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(খ) গঠিত ট্রাস্ট এর তহবিল, সম্পদ, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, দায়-দেনা এই আইনের অধীন গঠিত ট্রাস্টের তহবিল, সম্পদ, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, দায়-দেনা হিসাবে গণ্য হইবে;

(গ) গঠিত ট্রাস্ট কর্তৃক বা উহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোনো মামলা বা গৃহীত কোনো কার্য বা ব্যবস্থা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে বা চলমান থাকিবে যেন উক্ত Ordinance রহিত হয় নাই;

(ঘ) প্রণীত সকল বিধি, প্রবিধান যাহা উক্ত Ordinance রহিত হওয়ার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত কার্যকর ছিল উহা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধান দ্বারা রহিত বা পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ এবং যতদূর পর্যন্ত এই আইনের বিধানাবলির পরিপন্থি না হয় ততদূর পর্যন্ত কার্যকর থাকিবে;

(ঙ) নিযুক্ত ট্রাস্টিগণ এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যে শর্তাধীনে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তাধীনে নিয়োজিত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে প্রদেয় সুবিধাদি প্রাপ্ত হইবেন; এবং

(চ) নিযুক্ত কর্মচারীগণ এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যে শর্তাধীনে চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, এই আইনের বিধান অনুযায়ী পরিবর্তিত না হওয়া পর্যন্ত, সেই একই শর্তাধীনে ট্রাস্টের চাকরিতে নিয়োজিত থাকিবেন এবং পূর্বের নিয়মে ক্ষেত্রমত, প্রদেয় বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্ত হইবেন।

Copyright © 2010, Legislative and Parliamentary Affairs Division
Ministry of Law, Justice and Parliamentary Affairs

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here